কক্সবাজারে র‍্যাবের সঙ্গে গোলাগুলি, নিহত ২

কক্সবাজারে র‍্যাবের সঙ্গে মাদক চোরাকারবারিদের গোলাগুলির ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার সকালে রামু উপজেলার পানেরছড়া এলাকায় কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন চট্টগ্রামের লোহাগড়া উপজেলার রতন রুদ্র (৩১) ও নিজাম উদ্দিন (৩০)। এ সময় জ্বালানি তেলের খালি একটি থেকে ৪ লাখ ৫০ হাজার ইয়াবা বড়ি ও চারটি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) দাবি, টেকনাফ থেকে ইয়াবা বোঝাই করে তেলের গাড়িটি ঢাকায় যাচ্ছিল।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে র‍্যাব-৭ চট্টগ্রামের মিডিয়ার অফিসার ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মিমতানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের পানেরছড়া এলাকায় আগে থেকে র‍্যাবের একটি তল্লাশি চৌকি বসানো ছিল। আজ সকাল পৌনে সাতটার দিকে টেকনাফ থেকে জ্বালানি তেল পরিবহনের একটি লরি তল্লাশি চৌকির কাছে এলে র‍্যাবের সদস্যরা থামার সংকেত দেন। এ সময় কয়েকজন পাচারকারী লরি থেকে র‍্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। আত্মরক্ষার্থে র‍্যাবও পাল্টা গুলি ছোড়ে। গোলাগুলির একপর্যায়ে পাচারকারীরা পাশের জঙ্গলে আত্মগোপন করে। এ সময় ট্রাকের পাশে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। তবে তাঁরা ট্রাকের চালক-সহকারী কি না, এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। গুলিতে নিহত দুজনের বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগড়া এলাকায়। লরিটি টেকনাফের একটি পাম্পে জ্বালানি তেল খালাস করে ইয়াবা নিয়ে ঢাকায় ফিরছিল।

র‍্যাব সূত্র জানায়, পরে তেলের লরিতে তল্লাশি চালিয়ে ৪ লাখ ৫০ হাজার ইয়াবা ও চারটি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়। আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে আছে একটি নাইন এমএমজি পিস্তল, একটি রিভলবার ও দুটি ওয়ান শুটারগান।

রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসা কর্মকর্তা তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ দুটি হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। দুজনের শরীরে গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে।

ইয়াবাসহ মাদক চোরাচালান নিয়ন্ত্রণে ২ আগস্ট টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ, সাবরাং, টেকনাফ পৌরসভা, সমুদ্র উপকূলের বাহারছড়া ও হোয়াইক্যং এলাকায় র‍্যাবের নতুন পাঁচটি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। টেকনাফে আগে থেকে ছিল র‍্যাবের আরও একটি ক্যাম্প।

গত ১৩ দিনে পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা শুধু টেকনাফে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করেন প্রায় সাড়ে সাত লাখ ইয়াবা। গ্রেপ্তার করেন অন্তত ৭৮ জনকে। তারপরও ইয়াবা চোরাচালান বন্ধ হচ্ছে না।

র‍্যাব-৭ কক্সবাজার ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান বলেন, ইয়াবার উৎসভূমি টেকনাফসহ কক্সবাজারকে মাদকমুক্ত করতে কাজ চলছে র‍্যাবসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। ইয়াবা চোরাচালান ও মাদক ব্যবসায়ীদের সম্পর্কে তথ্য দিতে তিনি সবার সহযোগিতা চেয়েছেন।