নাটোরে আ.লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১৭

বড়াইগ্রামে শোক দিবসের পৃথক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে সাংসদ ও উপজেলা চেয়ারম্যানের পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন। আহত লোকজনের মধ্যে কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বড়াইগ্রাম হাসপাতাল, ১৫ আগস্ট। ছবি: সংগৃহীত
বড়াইগ্রামে শোক দিবসের পৃথক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে সাংসদ ও উপজেলা চেয়ারম্যানের পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন। আহত লোকজনের মধ্যে কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বড়াইগ্রাম হাসপাতাল, ১৫ আগস্ট। ছবি: সংগৃহীত

নাটোরের বড়াইগ্রামে জাতীয় শোক দিবসের পৃথক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে এসে সেখানকার সাংসদ ও উপজেলা চেয়ারম্যানের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে কমপক্ষে ১০ জন আহত ও ১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া অপর এক আলোচনা সভায় চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আরও সাতজন আহত হন। ওই ঘটনায় ছাত্রলীগের এক নেতাকে আটক করে পুলিশ।

বুধবার বিকেলে বড়াইগ্রাম পৌরসভা চত্বরে পৌর যুবলীগের উদ্যোগে শোকসভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান এবং জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী। অন্যদিকে একই সময় আধা কিলোমিটার দূরে বনপাড়া বাইপাস মোড়ে নাটোর-৪ (বড়াইগ্রাম-গুরুদাসপুর) আসনের সাংসদ আবদুল কুদ্দুসের পক্ষ থেকে শোকসভার আয়োজন করা হয়।

সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর পক্ষের লোকজনের দাবি, সভায় যোগ দিতে জোনাইল ও চান্দাই ইউনিয়ন থেকে তাঁদের পক্ষের নেতা-কর্মীরা মোটরসাইকেল শো-ডাউন নিয়ে আসছিলেন। কিন্তু উপজেলার রোলভা এলাকায় এলে সাংসদের পক্ষের সমর্থক সাইফুল ইসলাম মেম্বারের নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জন যুবক তাঁদের ওপর লোহার রড, হাতুড়ি ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করেন। এতে চান্দাই ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান জিন্নাহ, চান্দাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, জোনাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আযাদ, সহসভাপতি মাহতাব উদ্দিন, আওয়ামী লীগের কর্মী নজু খাঁ, ইসরাইল হোসেন, মেহেদি হাসান, মমিন আলী, ফরহাদ হোসেন ও যুবলীগের নেতা মিন্টু আহত হন। পরে তাঁদের মধ্যে সাতজনকে বড়াইগ্রাম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাকি তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

তবে সাংসদের পক্ষের নেতা সাইফুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা হামলা করিনি। আমরা সাংসদের অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলাম। সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর পক্ষের লোকজন উসকানিমূলক কথা বললে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। আমাদের পক্ষের লোকজন কাউকে আঘাত করেনি।’

সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার নেতা-কর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশে আসছিল। সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষের লোকজন অতর্কিতে হামলা করেছে। আমরা কোনো হামলা করিনি। আহতরা সবাই আমার পক্ষের কর্মী।’

অপরদিকে, সকালে বড়াইগ্রাম সরকারি কলেজের আলোচনা সভায় চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ছাত্রলীগের কর্মী হাসানুজ্জামান শিপন (১৯), উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য মাসুদ রানা (২০) ও শাহীন আলমকে (২০) বড়াইগ্রাম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে কলেজের অধ্যক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে হাসানুজ্জামান শিপনকে হাসপাতাল থেকে আটক করে পুলিশ।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকালে শিপন ৪ থেকে ৫ জন বহিরাগত লোককে নিয়ে কলেজ চত্বরে শোক দিবসের মঞ্চে গিয়ে শিক্ষকদের জন্য নির্ধারিত চেয়ারে বসেন। মাসুদ শিক্ষকদের চেয়ার ছেড়ে দিতে বললে তাঁদের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে শিপন উত্তেজিত হয়ে মাসুদের ওপর আক্রমণ চালায়। এ সময় অন্যরা এগিয়ে এলে সংঘর্ষ বাধে। এতে মাসুদ, শিপনসহ অন্তত সাতজন আহত হন।

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলীপ কুমার দাস বলেন, অধ্যক্ষের মৌখিক অভিযোগে শিপন নামে এক ছাত্রকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া বিকেলের ঘটনায় (আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষ) পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে।