ক্রেতার আকর্ষণ মাঝারি গরু

পথে হাঁটতে গিয়ে পাগলা গরুটি সামনে যেতে চায় না। দড়ি ধরে টানছেন কয়েকজন। হাট থেকে গরু কিনে বাড়ি ফিরতে বিড়ম্বনা। গতকাল বিকেলে গাবতলী হাটে।  ছবি: সাইফুল ইসলাম
পথে হাঁটতে গিয়ে পাগলা গরুটি সামনে যেতে চায় না। দড়ি ধরে টানছেন কয়েকজন। হাট থেকে গরু কিনে বাড়ি ফিরতে বিড়ম্বনা। গতকাল বিকেলে গাবতলী হাটে। ছবি: সাইফুল ইসলাম
>
  • হাটগুলোতে গরু-ছাগলের সরবরাহ পর্যাপ্ত।
  • কিন্তু ক্রেতা কম।
  • আজ ক্রেতার সংখ্যা বাড়তে পারে।

দাম ৩০ হাজার থেকে ২২ লাখ। যাঁর যেমন পছন্দ কিনে নিতে পারেন। গাবতলী গরুর হাটে এভাবেই এক গরু ব্যবসায়ী কোরবানির গরুর দাম বলছিলেন।
গতকাল সোমবার গাবতলী হাটে ঢুকতেই দেখা গেল, সারি সারি গরু আর মহিষ। কিন্তু ক্রেতাদের উপস্থিতি কিছুটা কম। হাটে মাঝারি ও বড় গরুর সংখ্যা বেশি হলেও বেশির ভাগ ক্রেতার আগ্রহ মাঝারি ও ছোট গরুতে।

রাজধানীর অন্যতম বড় গরুর হাট গাবতলী। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত গরু দেখতে আসা উৎসুক জনতা বেশি দেখা গেল। বেশির ভাগ মানুষ খালি গরু দেখছে, কিনছে কম। এমন কথাই জানালেন, বেশির ভাগ গরু ব্যবসায়ী। দুপুর থেকে হাটে ট্রাকের পর ট্রাক গরু আসতে দেখা গেল।

রাজধানীর অন্য হাটগুলোরও কমবেশি একই অবস্থা। পুরোনো ঢাকার নয়াবাজার, আফতাবনগর, কমলাপুর ও মিরপুর পল্লবী ইস্টার্ন হাউজিংয়ের গরুর হাটে ক্রেতাদের উপস্থিতি কম দেখা গেছে। এসব হাটে গরু, মহিষ ও ছাগলের সংখ্যা আগের বছরগুলোর চেয়ে বেশি বলে জানালেন বিক্রেতারা। কিন্তু কোরবানির ঈদের আর এক দিন বাকি থাকার পরও ক্রেতাদের উপস্থিতি কম বলে জানান এসব হাটের ব্যবস্থাপকেরা।

গাবতলী গরুর হাট পরিচালনা কমিটির সদস্য সানোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এই হাটে ঈদের দুই দিন আগে থেকে প্রতি দিন ১০ থেকে ১৫ হাজার গরু বিক্রি হয়। এবার গত দুই দিনে ১০ হাজার গরু বিক্রি হয়েছে। হাটে গরুর অভাব নেই, কিন্তু ক্রেতা কম। তবে তিনি আশা করছেন আজ মঙ্গলবার থেকে ক্রেতার সংখ্যা বাড়বে।

গাবতলী গরুর হাটে গতকাল সবার নজর কেড়েছে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থেকে আসা প্রায় ৫২ মণ ওজনের গরু রাজাবাবু। দাম হাঁকা হয়েছে ২২ লাখ। আরও আছে ২০ লাখ টাকার কালামানিক, ১৬ লাখ টাকারসুন্দরী, ১২ লাখ টাকার মেসিসহ বেশ কিছু গরু। এসব গরু দেখতে ভিড় লেগে ছিল। সবাই গরুর সঙ্গে সেলফি তোলায় ব্যস্ত। তবে এর মধ্যে দু-একজন পাওয়া গেল, যাঁরা গরুগুলো কেনার জন্য দামাদামি করছেন।

হাটে বড় গরু নিয়ে মাতামাতি থাকলেও বেশি বিক্রি হচ্ছে ছোট ও মাঝারি গরু। ৪০ থেকে ৮০ হাজার টাকা দামের এসব গরুর বিক্রিও বেশি। তবে চাহিদার তুলনায় এসব গরুর সরবরাহ কম উল্লেখ করে ক্রেতারা জানালেন, গতবারের চেয়ে গরু-ছাগলের দামও বেশি হাঁকছেন বিক্রেতারা।

আদাবর থেকে গাবতলীতে গরু কিনতে এসেছেন সালেহিন হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর গরু কেনার বাজেট ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। কিন্তু এই দামের গরু কম। গাবতলীতে এই দামের গরু না পেয়ে তিনি মিরপুর ইস্টার্ন হাউজিং হাটে যাবেন বলে জানান।

প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, এ বছর কোরবানিতে ৫০ লাখ গরু ও ৭০ লাখ ছাগল বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব গরুর বেশির ভাগই দেশের উত্তরাঞ্চল ও কুষ্টিয়া অঞ্চল থেকে আসছে। তবে গরু-ছাগল ব্যবসায়ীরা জানান, হাট ছাড়াও এবার সরাসরি খামার ও অনলাইনে প্রায় ৮ লাখ গরু বিক্রি হবে। এর বাইরে মিরপুর কালশী সড়ক, মিরপুর ১২ নম্বর, কচুক্ষেত, ধানমন্ডি লেক, বসুন্ধরার পাশে ৩০০ ফুট সড়কসহ বেশ কিছু এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে ২০-৩০টি করে গরু-ছাগল নিয়ে বিক্রেতারা বসেছেন। অনেকে সেখান থেকেও কোরবানির পশু কিনছেন।