কোটা বাতিলের সুপারিশ প্রতারণা

মওদুদ আহমদ। ফাইল ছবি
মওদুদ আহমদ। ফাইল ছবি

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের যে সুপারিশ করা হয়েছে, সেটি সরকারের প্রতারণা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ। তিনি বলেছেন, ছাত্ররা চেয়েছেন সব ধরনের সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার, এমন সংস্কার তো শিক্ষার্থীরা চাননি।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে মওদুদ আহমদ এ মন্তব্য করেন। ‘বর্তমান বাংলাদেশে ভোটাধিকার, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘জাতীয় মানবাধিকার পরিষদ’ নামের একটি সংগঠন।

মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরকার বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। এটি পরিবর্তন দরকার। ছাত্ররা চেয়েছে সব ধরনের সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার। এমন সংস্কার তো শিক্ষার্থীরা চায়নি। ছাত্ররা কোটা সংস্কার চেয়েছে, যাতে সরকারি চাকরির সব অবস্থায় মেধার মূল্যায়ন হয়। কিন্তু প্রস্তাব করা হলো প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা থাকবে না।’ তিনি বলেন, ‘দেশের তরুণ প্রজন্ম জানত না আওয়ামী লীগ কী জিনিস। কোটা ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কী আচরণ করেছে, সেটা তারা বুঝতে পেরেছে। সরকার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তাই তরুণ প্রজন্ম আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে না।’

খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ড বিষয়ে মওদুদ আহমদ অভিযোগ করেন, ‘খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য সরকার গঠিত মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্ট একটি প্রতারণা। সরকার খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা নিয়ে ছলচাতুরী করছে। যে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে, সেখানে একজনকে মোটামুটি বিশেষজ্ঞ বলা যেতে পারে। বাকিরা মাত্র পাস করে বের হয়েছে। খালেদা জিয়ার শারীরিক যেসব সমস্যা, সে বিষয়ে তাদের কোনো অভিজ্ঞতা নেই। আমি বলব, এটাও একটা সরকারের প্রতারণা।’

সাবেক মন্ত্রী মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আর সময় নেই, সময় ফুরিয়ে আসছে। আমাদের একটি সংকটময় সময় পার করতে হবে। আমরা বিচার বিভাগ, গণতন্ত্র, মানবাধিকারের স্বাধীনতা ফিরে পাব কি না, সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। তাই সবাইকে প্রস্তুতি নিতে হবে। কোনো দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। তাই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।’

নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আমাদের হাতে আর এক মাস সময় আছে। এই এক মাসে দেশের অনেক কিছু পরিবর্তন হবে। সরকার একটা নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করতে চায়। সে সরকারে তাঁরাই থাকবেন, যাঁরা বর্তমান সংসদে আছেন। নির্বাচনকালীন সরকার বলতে কোনো কিছু সংবিধানে নেই। এটা তারা নিজেদের খেয়াল-খুশিমতো করতে চায়। প্রধানমন্ত্রী নিজেই প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। এখন যাঁরা মন্ত্রী আছেন, তাঁরাই মন্ত্রী থাকবেন। তাঁদের অধীনে নির্বাচন করে আবারও ক্ষমতায় থাকতে চায়।’ তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি নিরপেক্ষ সরকার গঠন করা যেতে পারে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে সমঝোতা হতে পারে। সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে।