হরিলুটের সরকার আওয়ামী জোট সরকার

রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি
রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি

ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা সেতু, কালভার্ট, সড়ক-মহাসড়ক, উড়াল সেতুর নির্মাণে মাত্রাতিরিক্ত ব্যয়বৃদ্ধি করে জনগণের টাকা ‘লোপাট’ করে যাচ্ছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, হরিলুটের সরকার আওয়ামী জোট সরকার।

আজ বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষে রিজভী এই অভিযোগ করেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, বহুল আলোচিত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে সরকার। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘তাড়াহুড়া’ করে ৩ হাজার ৮২৫ কোটি টাকার এ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, ‘অবৈধ সরকার দলীয় লোকদের আঙুল ফুলে কলাগাছ বানাতে রাষ্ট্রীয় অর্থভান্ডার ডাকাতির সুযোগ করে দিয়েছে।’

ইভিএমের বিষয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ জনসমাজের নানা স্তরের সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন আগামী নির্বাচনে ব্যবহার না করার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আপত্তি জানিয়েছিল। প্রধান নির্বাচন কমিশনারও সেই আপত্তিতে সাড়া দিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হবে না বলে জানিয়েছিলেন। অথচ গতকাল একনেকে দেড় লাখ ইভিএম সংগ্রহ প্রকল্পের অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী। সরকার জনগণকে ত্যাজ্য করে জালিয়াতির মেশিন ইভিএমের ওপর নির্ভরশীল হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ইভিএম কেনার পেছনে সরকারের দুটি উদ্দেশ্য কাজ করছে। প্রথমটি হচ্ছে ‘ভোটারবিহীন কারচুপির’ নির্বাচন, দ্বিতীয়টি হচ্ছে এই প্রকল্পের মাধ্যমে বিশাল অঙ্কের টাকা ‘হাতিয়ে নেওয়া’।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে রিজভী বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসাসেবা দিতে বিভিন্নভাবে বাধা দিচ্ছে সরকার। খালেদা জিয়াকে আগে নিয়মিত ফিজিওথেরাপি দিতেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের একজন জ্যেষ্ঠ অভিজ্ঞ থেরাপিস্ট। পরে তাঁকে পরিবর্তন করে ‘সরকারদলীয়’ একজন নতুন ‘অনভিজ্ঞ’ থেরাপিস্টকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যা রহস্যজনক। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের মেডিকেল বোর্ডে রাখা হয়নি। এ জন্যই বিএনপি খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠিত।

গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেলকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। সে সময় তাঁর সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীরা দেখা করতে গেলে তাঁদেরও আটক করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী। তিনি বলেন, বিএনপি নেতা সোহেলের জন্য নিয়ে যাওয়া ওষুধ পর্যন্ত নিতে দেয়নি পুলিশ। নির্বাচন সামনে থাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ‘ছেঁকে’, ‘ছেঁকে’ বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করছেন। সারা দেশে গ্রেপ্তার অভিযানের নিন্দা জানান তিনি।