বন-পাহাড়ের নীলপরি

নীলপরি। মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া বনে।  ছবি: মনিরুল খান
নীলপরি। মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া বনে। ছবি: মনিরুল খান

গাছের সরু ডাল-পাতা ও লতায় ঝুলে-দুলে খাবার তল্লাশি করে এরা। সেটা দেখতে অনেকটা অ্যাক্রোবেট (শারীরিক শৈলী) প্রদর্শনের মতো। পাঁচ-ছয়টি পাখি মিলে যখন লতা-পাতায় ঝুলে খাবার খুঁজতে শুরু করে, তখন তা মনোমুগ্ধকর হয়ে ওঠে এই দেহভঙ্গির কারণে। এদের সৌন্দর্যও চেয়ে থাকার মতো। নীলপরি নাম তো আর এমনি এমনি হয়নি।

‘হুইট চি, হুইট চি, হুইট চি, হুইটইউ’ গানেও প্রাণ জুড়ায়। পুরুষ পাখির কপাল-ঘাড়-পিঠ ধাতব চকচকে-ভেলভেটি নীল। চিবুক-গলা-বুক ও লেজের প্রা‌ন্তের উপরিভাগসহ ডানার প্রান্ত মখমলি কালো। ডানার কালো রঙের ওপর নীলের আভা ছড়ানো। ঠোঁট-পা কালো। হলুদ বৃত্তের ভেতরে কালো চোখের মণি।

মেয়ে পাখি নীলচে-সবুজ রঙা। গহিন টিলা-পাহাড়ি বনে এদের বাস। চঞ্চল নীলপরিরা ৪ থেকে ১২টির দলে ভাগ হয়ে গাছে গাছে উড়ে বেড়ায়। আমুদে-খেলুড়ে এরা অন্য কিছু পাখির ডাক নকল করতেও পারে। এদের মূল খাদ্য পাকা ফল ও ফুলের মধুরেণু। জাম ও ডুমুর বেশি প্রিয়।

শীত থেকে গ্রীষ্ম, এই সময়ে গাছের ডালে বাসা করে। জলপাই-ধূসর বা সবজেটে-সাদা রঙের ২-৩টি ডিম পেড়ে মেয়েটি একাই তা দিয়ে ছানা ফোটায়।

নীলপরির ইংরেজি নাম এশিয়ান ফেইরি-ব্লুবার্ড। বৈজ্ঞানিক নাম lrena puella।