নরসিংদীর আরেকটি বাড়ি জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রয়েছে পুলিশ
নরসিংদীর গাঙপাড় এলাকায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা বাড়ির ভেতর থাকা ‘জঙ্গিদের’ আত্মসমর্পণের অনুরোধ জানাচ্ছে পুলিশ। ড্রোনে অ্যান্ডোস্কোপিক ক্যামেরা ব্যবহারের মাধ্যমে সন্দেহজনক ফ্ল্যাটের ভেতর পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। বাড়ির চারপাশে পুলিশের কর্ডন করে রাখা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার নরসিংদীর ভগীরথপুরের একটি বাড়িতে পুলিশের অভিযানে এক নারীসহ দুজন নিহত হয়েছেন। ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট (সিটিটিসি) ও পুলিশ সদর দপ্তরের এলআইসি শাখা যৌথভাবে ওই অভিযান পরিচালনা করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত দুজন জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির সদস্য।
গাঙপাড়ের নিলুফা ভিলা নামের সাততলা যে বাড়িটি পুলিশ ঘিরে রেখেছে, এর মালিক আফজাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি। সাততলা বাড়ির র দক্ষিণ পাশে জঙ্গি সদস্যরা অবস্থান করছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঘটনাস্থলে সিটিটিসির প্রধান মনিরুল ইসলাম বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ফ্ল্যাটটিতে জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা রয়েছেন বলে তাঁরা জোরালোভাবে সন্দেহ করছেন। সেখানে কমপক্ষে দুজন রয়েছেন। এর মধ্যে কমপক্ষে একজন নারী। তাঁদের কাছে বিস্ফোরকদ্রব্য রয়েছে বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে।
মনিরুল ইসলাম বলেন, গতকাল নরসিংদীর অন্য একটি বাড়িতে জঙ্গি বিরোধী অভিযানের সময় থেকেই সন্দেহজনক এই ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হচ্ছে। এখন পর্যন্ত তাঁদের অনুরোধ করা হচ্ছে। সমঝোতায় দক্ষ কর্মকর্তারা তাঁদের আত্মসমর্পণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনও বলা হয়েছে, হত্যার সঙ্গে তাঁদের সংশ্লিষ্টতার তথ্য যেহেতু পাওয়া যায়নি, তাই তাঁদের যতটা সম্ভব আইনগত সহযোগিতা দেওয়া হবে। এরপরও ভেতর থেকে তাঁরা সাড়া দিচ্ছেন না। তাঁদের চলাফেরায় কিছু প্রস্তুতির আভাস পাওয়া যাচ্ছে। তিনি জানান, ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা জঙ্গি কর্মকাণ্ডে এর আগেও জড়িয়েছিলেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। শেষ পর্যন্ত তাঁরা সাড়া না দিলে সোয়াট অপারেশনে যাওয়া হবে।
গতকালের অভিযানে নিহত দুই জঙ্গির পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে মনিরুল জানান, নিহত দুজনের আঙুলের ছাপ ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। জাতীয় পরিচয়পত্র থেকেও পরিচয় জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সকাল নয়টার দিকে দেখা যায়, ড্রোনে অ্যান্ডোস্কোপিক ক্যামেরার মাধ্যমে জানালার কাছাকাছি থেকে ফ্ল্যাটের ভেতর কী হচ্ছে, তা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পাশের ফ্ল্যাটে পুলিশের সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন।
পুরো এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। ওই বাড়িসহ আশপাশের সব কটি বাড়ির বাসিন্দাদের ছাদে না ওঠার জন্য সকালে মাইকিং হয়েছে। পুলিশের ঘিরে রাখা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। আশপাশের প্রায় সব দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে উৎসাহী লোকজন জড়ো হয়ে আছে।
মনিরুল ইসলাম ব্রিফ শেষ করার ১০-১২ মিনিটের মাথায় ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে বড় ধরনের শব্দ পাওয়া যায়। তা গুলি, নাকি বিস্ফোরণের শব্দ, তা বোঝা যায়নি।