হেলমেট ব্যবহার করছেন বাইক-আরোহীরা

রাস্তায় বের হলে এখন সবচেয়ে বেশি যে জিনিসটি চোখে পড়ে তা হচ্ছে চালক ও যাত্রী উভয়ের মাথায়ই হেলমেট। নগরবাসী বলছেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সফলতা হচ্ছে হেলমেটের ব্যবহার।

মোটরসাইকেলের প্রায় সব আরোহীর মাথায় এখন হেলমেট। পেছনের যাত্রীটিও বাদ যায় না। একটি রাইড শেয়ারিং সার্ভিসের চালক নূরে আলম প্রায় পাঁচ মাস ধরে রাইড শেয়ার করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই মাস আগেও হেলমেট নিয়ে এত চিন্তা করতাম না। কিন্তু এখন হেলমেট ছাড়া বের হই না।’ তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণেই এ পরিবর্তন হয়েছে এবং মানুষ সচেতনও হয়েছে। নূরে আলমের পেছনের যাত্রী রিয়াদ বলেন, ট্রাফিক আইন মানার ক্ষেত্রে যতটুকু উন্নতি হয়েছে তার কৃতিত্ব শিক্ষার্থীদের। ওদের কারণেই পুলিশও অনেক সতর্ক থাকে।

আরেকটি রাইড শেয়ারিং সার্ভিসের চালক মো. ফারুক বলেন, হেলমেট না থাকলে রাস্তায় সার্জেন্ট ধরেন। এ ছাড়া এ ধরনের সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকেও তাঁদের হেলমেটে ছাড়া মোটরসাইকেল চালাতে নিষেধ করা হয়েছে। যাত্রীরাও হেলমেট না থাকলে উঠতে চান না বলে তিনি জানান।

সম্প্রতি মগবাজার মোড়ে মোটরসাইকেলের এক চালক তাঁর পেছনের যাত্রীর হেলমেট না পরা দেখে বাহনটি থামিয়ে পেছনের আরোহীকে অনুরোধ করেন যেন হেলমেটটি মাথায় দিয়ে নেন। মোটরসাইকেলের বেশ কয়েকজন চালক জানান, হেলমেট অনেক বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করে। কিন্তু আগে এটা জেনেও কেউ মানতে চাইতেন না। তবে এখন নিজ থেকেই সবাই সচেতন হয়েছেন। এটা অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাচ্ছে। তাঁরা বলেন, হেলমেটের মতো সড়কের অন্য বিষয়গুলোতেও যদি প্রশাসন কঠোর হয়, তবে সবকিছুই মানুষ অভ্যাসে পরিণত করে ফেলবে। সড়কে শৃঙ্খলা ফিরবে।

হেলমেট ব্যবহারে পরিবর্তন এলেও এখনো কেউ কেউ হেলমেট ছাড়া রাস্তায় বের হন। পান্থপথ মোড়ে চালকের পেছনের যাত্রী হাতে হেলমেট নিয়ে যাচ্ছিলেন। জানতে চাইলে বলেন, হেলমেটে মাথায় সমস্যা বোধ করেন। হেলমেট মাথায় না থাকা কেউ কেউ বলেছেন, তাঁরা ভুল করেছেন। পরবর্তী সময় হেলমেট ছাড়া বের হবেন না।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর পুলিশ বাইক-আরোহীদের হেলমেট ব্যবহার করানোর ব্যাপারে বেশ কঠোর হয়। বাইকচালকের পাশাপাশি পেছনের যাত্রীকেও হেলমেট পরতে বাধ্য করা হয়। বিভিন্ন রাইড শেয়ারিং সেবার কারণে রাজধানীতে মোটরসাইকেলের ব্যবহার বেড়েছে। গণপরিবহন ব্যবহারকারী অনেকেই এখন এই সেবার ওপর ভরসা করেন। যাত্রীদের কয়েকজন জানান, পরিবহন যেটাই হোক, নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করতে হয়। তাই মোটরসাইকেলে রাইড শেয়ারিং সেবা নিতে গেলে তাঁরা হেলমেট ছাড়া ওঠেন না।