বাবার আসন ধরে রাখার চ্যালেঞ্জে জুয়েল আরেং

জুয়েল আরেং
জুয়েল আরেং

ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া) আসন থেকে নির্বাচিত সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিন ২০১৬ সালের ১১ মে মারা যান। তখন উপনির্বাচনে তাঁর ছেলে জুয়েল আরেং (৩৩) সর্বকনিষ্ঠ সাংসদ নির্বাচিত হন। বাবার মৃত্যুর পর এলাকায় উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছেন জুয়েল আরেং। কিন্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাঁর বিরুদ্ধে মনোনয়ন পেতে দলীয় আবেদন ফরম জমা দিয়েছেন হালুয়াঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক আহম্মেদ খান, আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করিরুল বেগসহ ১৪ জন। কে পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন, এ নিয়ে দুই উপজেলার চায়ের স্টল থেকে শুরু করে সর্বত্র চলছে আলোচনার ঝড়।

হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৯টি ইউনিয়নে মোট ভোটার ৩ লাখ ৭৬ হাজার ৪২০ জন। এর মধ্যে হালুয়াঘাটে ২ লাখ ৩৩ হাজার ১৪০ ও ধোবাউড়াতে ১ লাখ ৪৪ হাজার ১৮০ ভোটার।

দলীয় মনোনয়ন পেতে হালুয়াঘাট থেকে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন সাংসদ জুয়েল আরেং, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কবিরুল ইসলাম বেগ, আওয়ামী লীগের সদস্য অধ্যাপক কবিরুল ইসলাম, সদস্য ও কৈচাপুর ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, আওয়ামী লীগের সদস্য ইসমাইল হোসেন, সৈনিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদ নুরুল ইসলাম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আনোয়ার হোসেন ও রাসেদুল হক। ধোবাউড়াতে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পীযূষ কান্তি সরকার, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যক্ষ হেলাল উদ্দিন, সদস্য সিএন সরকার চন্দন, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও জেলা পরিষদের সদস্য আসাদুজ্জামান আকন্দ, জেলা স্বেচ্চাসেবক লীগের নেতা অধ্যক্ষ মনোয়ার হোসেন ও যুবলীগের সদস্য টিপু সুলতান।

দলীয় নেতা–কর্মী সূত্রে জানা গেছে, বাবার মুত্যুর পর উত্তাধিকারসূত্রে এবং গত দুই বছরে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিচারে জুয়েল আরেং দলীয় মনোনয়নে এগিয়ে আছেন। তবে তাঁর বিরুদ্ধে মনোনয়ন দৌড়ে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক আহম্মেদ খান। তবে দল থেকে জনপ্রতিনিধিদের নির্বাচনে অংশ নিতে বারণ থাকায় কর্মী–সমর্থকদের মধ্যে কিছুটা হতাশা দেখা দিয়েছে। মনোনয়নযুদ্ধে বয়সে প্রবীণ হলেও আশায় আছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা করিরুল ইসলাম বেগ। এ ছাড়া হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়ায় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত চিকিৎসক, জনপ্রতিনিধি, তরুণ ও প্রবীণ নেতারা দলীয় মনোনয়ন পেতে কেন্দ্রে লবিংসহ দৌড়ঝাঁপ করছেন।

কবিরুল ইসলাম বেগ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ নিয়ে তিনবার মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছি। দীর্ঘদিন ধরে মানুষের ও দলের উন্নয়নের জন্য কাজ করেছি। আশা করি নেত্রী সবকিছু বিবেচনা করে আমাকে মনোনয়ন দেবেন।’ পৌর মেয়র খাইরুল আলম বলেন, ‘এ আসনে সাংসদ জুয়েল আরেংসহ দল থেকে অনেকেই মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। তবে মনোনয়নের ব্যাপারে জুয়েল আরেং অনেকটা এগিয়ে। এখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাঁকে ভালো মনে করবেন। আমরা তাঁকেই মেনে নেব।’

ফারুক আহম্মেদ খান বলেন, এই আসনে বিরোধী দল থেকে শক্তিশালী প্রার্থী দেওয়া হবে। তার জন্য দলীয়ভাবে উপযুক্ত প্রার্থী দিতে হবে। এখানে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা সবকিছু বিবেচনা করে দলীয় প্রার্থীর ব্যপারে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে তিনি আশাবাদী।

সাংসদ জুয়েল আরেং বলেন, ‘বাবার রেখে যাওয়া উন্নয়নমূলক কাজ সমাপ্ত করেছি। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতায় এলাকায় অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করতে পেরেছি। বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা আশা করি আমাকেই মনোনয়ন দেবেন। মনোনয়ন পেলে সবাইকে নিয়ে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করা হবে।’