আবার সরোয়ার-শামিমের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা

জাহিদ ফারুক শামীম ,মজিবর রহমান সরোয়ার
জাহিদ ফারুক শামীম ,মজিবর রহমান সরোয়ার

বরিশাল-৫ (সদর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন মজিবর রহমান সরোয়ার। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম। ২০০৮ সালেও মজিবর-শামীম লড়াই হয়ছিল সদর আসনে।

বরিশাল সিটি করপোরেশন নিয়ে বিভাগীয় সদরের এই আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৯৭ হাজার ২৩০ জন। এই আসনে ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির হয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাস জয়ী হন। ১৯৯৬ সালে সাংসদ হন আবদুর রহমান বিশ্বাসের ছেলে এহতেশামুল হক নাছিম বিশ্বাস। ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিএনপির প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার বিজয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রয়াত শওকত হোসেন হিরণ। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির মজিবর রহমান সরোয়ার আবার জয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের জাহিদ ফারুক। আবার ২০১৪ সালের দশম জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রয়াত শওকত হোসেন হিরণ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাংসদ হন। পরে তাঁর মৃত্যু হলে স্ত্রী জেবুন্নেছা আফরোজ উপনির্বাচনে এই আসনের সাংসদ হন।

দুই দলের নেতা-কর্মীরা বলেন, এ আসনটি বিএনপির  শক্ত ঘাঁটি। বিএনপি এই আসনটিকে নিজেদের বলে মনে করলেও ওই নির্বাচনে জাহিদ ফারুক শামীম অল্প ভোটের ব্যবধানে হেরেছিলেন। ফলে এবার তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।

বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও নগর বিএনপির সভাপতি সরোয়ার বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র ছিলেন এবং সদর আসনে চারবারের সাংসদ। সদর আসনে এবার ১২ জন মনোনয়ন চেয়েছিলেন। সরোয়ার ছাড়া আরও ছিলেন দলের আরেক যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ বিলকিস আক্তার জাহান শিরিন, বরিশাল (দক্ষিণ) জেলা বিএনপির সভাপতি এবায়দুল হক চান, বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামাল। এবার মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এই আসনে মনোনয়ন দাবি করায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে মনোনয়ন নিয়ে নানা জল্পনা–কল্পনা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে সরোয়ারই গতকাল দলীয় মনোনয়ন পান।

>২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে জয়ী মজিবর রহমান সরোয়ারের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের জাহিদ ফারুক।

সরোয়ার মুঠোফোনে বলেন, বরিশালের মানুষ সব সময় বিএনপির পক্ষে ছিল। এবারের নির্বাচনেও বিএনপির সঙ্গেই থাকবে। আজ সকালে এলাকায় ফিরে তিনি মাঠে নামবেন।

অন্যদিকে বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ এ আসনটিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জাহিদ ফারুককে। রোববার তিনি দলীয় মনোনয়নের চিঠি পান।

আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, ২০০৮ সালে নবম জাতীয় নির্বাচনে বরিশাল সদর আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন জাহিদ ফারুক। ওই নির্বাচনে মজিবর রহমান সরোয়ার ১ লাখ ৫ হাজার ৬৯৪ ভোট পেয়ে জয়ী হন। আর জাহিদ ফারুক পান ৯৯ হাজার ৩৯৩ ভোট। বরিশাল সদর আসনে এটাই কোনো আওয়ামী লীগ প্রার্থীর এযাবৎকালের সর্বোচ্চ ভোট।

এবার এই আসনে আরও মনোনয়ন চেয়েছিলেন বর্তমান সাংসদ জেবুন্ননেছা, নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম আব্বাস চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম) সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাইদুর রহমানসহ ১২ জন। তবে শেষ পর্যন্ত শামীমই দলীয় মনোনয়ন পান।

জাহিদ ফারুক গতকাল বলেন, রোববার দলীয় মনোনয়নের চিঠি হাতে পেয়েছেন। অল্প সময়ের মধ্যেই এলাকায় এসে নির্বাচনী কাজে হাত দেবেন। দেশের মানুষ প্রধানমন্ত্রীর এই উন্নয়ন অগ্রযাত্রার পক্ষে রায় দেবে। বরিশালবাসীও এই অগ্রযাত্রার সঙ্গে থাকবে বলে তিনি আশাবাদী।