এবার নির্বাচনেও ইস্যু পার্বত্য চুক্তি

পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়টি পাহাড়ের তিন আসনের নির্বাচনে এবার প্রাধান্য পাচ্ছে। চুক্তি বাস্তবায়নে কারা অবদান বেশি রেখেছে তা নিয়ে পাহাড়ে সরব রয়েছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীরা।

বিএনপি আমলে চুক্তির বেশিরভাগ ধারা বাস্তবায়ন হয়েছে বলে দলটির নেতারা দাবি করেছেন। অপর দিকে আওয়ামী লীগ নেতারা তাঁদের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে জিতলে চুক্তির পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন।

১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ সরকার ও জনসংহতি সমিতির মধ্যে পার্বত্য চুক্তি সম্পাদিত হয়। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, এ পর্যন্ত বান্দরবানে ২২টি বিভাগ ও ৮টি প্রতিষ্ঠান বা অধীন দপ্তর, রাঙামাটিতে ১৪টি বিভাগ ও ৫টি প্রতিষ্ঠান এবং খাগড়াছড়িতে ২১টি বিভাগ ও ৯টি প্রতিষ্ঠান জেলা পরিষদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ তথ্য তিনটি জেলা পরিষদের।

বিএনপির দাবি, তাদের সরকারের সময় ১২টি বিভাগ জেলা পরিষদে হস্তান্তর করা হয়েছে। আর আওয়ামী লীগ সরকার কয়েকটি প্রতিষ্ঠান হস্তান্তর করলেও বিভাগ হস্তান্তর করেছে মাত্র দুটি।

রাঙামাটি আসনে বিএনপির প্রার্থী পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক সাবেক উপমন্ত্রী মণি স্বপন দেওয়ান বলেন, বিএনপি কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী। এ জন্য বিএনপির সময়ে জেলা পরিষদে সবচেয়ে বেশি বিভাগ হস্তান্তর হয়েছে। ভবিষ্যতে ক্ষমতায় গেলেও পার্বত্য সমস্যার স্থায়ী সমাধান করবে।

জেলা পরিষদের কর্মকর্তারা বলেছেন, চুক্তির আগে স্থানীয় সরকার পরিষদের সময়ে বিভাগ হস্তান্তরের কাজ শুরু হয়। এর মধ্যে ১৯৮৯ সালে জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় থাকার সময় পাঁচটি বিভাগ হস্তান্তর করে। বিএনপি ১৯৯১ সালে ১০টি ও ২০০১ সালে হস্তান্তর করে ২টি বিভাগ।

তবে আওয়ামী লীগের নেতারা দাবি করেন, রাঙামাটিতে ২৫টি, বান্দরবানে ২৮টি ও খাগড়াছড়িতে ৩০টি বিভাগ হস্তান্তর করা হয়েছে।

বান্দরবান আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং বলেন, ‘চুক্তি আওয়ামী লীগ বাস্তবায়ন করেছে। পুনরায় ক্ষমতায় এলে বাকি ধারাগুলোও আমরা বাস্তবায়ন করব। নির্বাচনী ইশতেহারেও সেটি থাকবে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা পরিষদের কর্মকর্তারা বলেছেন, মূল বিভাগগুলো হস্তান্তর করা হলে অধীন দপ্তরগুলোর হস্তান্তরের আর প্রয়োজন নেই। যেমন সমাজসেবা বিভাগ হস্তান্তর করলে শিশু পরিবার এমনিতে এসে যায়। একইভাবে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের সঙ্গে উদ্যান উন্নয়ন, কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন ও তুলা উন্নয়ন বোর্ড হস্তান্তর হয়ে যায়। কিন্তু ২০১২ ও ২০১৪ সালে অধীন ওই দপ্তরগুলো জেলা পরিষদে হস্তান্তর দেখানো হয়েছে।

রাঙামাটি আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার বলেন, বিএনপি পার্বত্য চুক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান না নিলে ভালো। আওয়ামী লীগই পুরো চুক্তি বাস্তবায়ন করবে।