নৌকায় ২০, ধানের শীষে ১৩

জয়া সেনগুপ্তা, সেলিমা আহমাদ, তাহসিনা রুশদীর ও শামা ওবায়েদ
জয়া সেনগুপ্তা, সেলিমা আহমাদ, তাহসিনা রুশদীর ও শামা ওবায়েদ
>

• সংসদ নির্বাচনে নারী প্রার্থী
• আওয়ামী লীগের নারী প্রার্থীদের মধ্যে নতুন মুখ দুজন।
• বিএনপির বেশির ভাগই নেতাদের স্ত্রী।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৩ জন নারী প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। তাঁদের বেশির ভাগই দলটির নেতাদের স্ত্রী। ২০০৮ সালের নির্বাচনেও বিএনপি ১৩ জন নারীকে মনোনয়ন দিয়েছিল। তাঁদের মধ্যে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ নির্বাচিত হয়েছিলেন ৩ জন। প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় এবার নির্বাচন করতে পারছেন না খালেদা জিয়া। তবে ২০০৮ সালে জয়ী হওয়া অন্য দুই নারী প্রার্থী এবারও বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন।

এর বাইরে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের হয়ে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লড়বেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কুঁড়ি সিদ্দিকী। তিনি আবদুল কাদের সিদ্দিকীর মেয়ে। ফলে বিএনপি জোট থেকে এবার মোট নারী প্রার্থী ১৪ জন।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে নারী প্রার্থী আছেন ২০ জন। এর মধ্যে গোপালগঞ্জ-৩ শেখ হাসিনা, রংপুর-৬ শিরীন শারমিন চৌধুরী, শেরপুর-২ মতিয়া চৌধুরী, ফরিদপুর-২ সাজেদা চৌধুরী, চাঁদপুর-৩ দীপু মনি, ঢাকা-১৮ সাহারা খাতুন, গাজীপুর-৫ মেহের আফরোজ চুমকি, গাজীপুর-৪ সিমিন হোসেন রিমি, মানিকগঞ্জ-২ মমতাজ বেগম, মুন্সিগঞ্জ-২ সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি, খুলনা-৩ বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, গাইবান্ধা-২ মাহবুব আরা বেগম (গিনি), কুমিল্লা-২ সেলিমা আহমাদ, ফেনী-১ শিরীন আখতার (জাসদ-ইনু), নোয়াখালী-৬ আয়েশা ফেরদাউস, কক্সবাজার-৪ শাহীন আক্তার চৌধুরী, যশোর-৬ ইসমাত আরা সাদেক, বাগেরহাট-৩ হাবিবুন নাহার, সুনামগঞ্জ-২ জয়া সেনগুপ্তা ও নেত্রকোনা-৪ রেবেকা মমিন। এর মধ্যে সেলিমা আহমাদ ও শাহিন আক্তার ছাড়া বাকিরা সবাই এর আগেও সাংসদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

শাহিন আক্তার আওয়ামী লীগের বিতর্কিত সাংসদ আবদুর রহমান বদির স্ত্রী। বদিকে এবার মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। সেলিমা আহমাদ বাংলাদেশ উইমেন চেম্বারের বর্তমান সভাপতি। তাঁর স্বামী ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ।

অন্যদিকে বিএনপির নারী প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন হাসিনা আহমেদ—কক্সবাজার-১; শামা ওবায়েদ—ফরিদপুর-২; রুমানা মোর্শেদ (কনকচাঁপা)—সিরাজগঞ্জ-১; শামীম আরা বেগম—ঢাকা-১১; রিটা রহমান—রংপুর-৩; তাহমিনা জামান—নেত্রকোনা-৪; জিবা আমিন খান—ঝালকাঠি-২; সাবিনা ইয়াসমিন—নাটোর-২; সানসিলা জেবরিন—শেরপুর-১; রুমানা মাহমুদ—সিরাজগঞ্জ–২; মাছুদা মোমিন—বগুড়া–৩; আফরোজা আব্বাস—ঢাকা–৯; তাহসিনা রুশদীর (লুনা)—সিলেট–২ এবং আফরোজা খান—মানিকগঞ্জ–৩।

বিএনপির নারী প্রার্থীদের মধ্যে তাহমিনা জামান ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের স্ত্রী। হাসিনা আহমেদ স্থায়ী কমিটির কনিষ্ঠ সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী। তিনি এর আগে ২০০৮ সালে কক্সবাজারের চকরিয়া–পেকুয়া আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন।

শামীম আরা ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতা এম এ কাইয়ুমের (আত্মগোপনে আছেন) স্ত্রী, সাবিনা ইয়াসমিন বিএনপির নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদারের স্ত্রী। রিটা রহমান প্রয়াত রাজনীতিক মসিউর রহমান যাদু মিয়ার মেয়ে এবং সানসিলা জেবরিন শেরপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হজরত আলীর মেয়ে।

রোমানা মাহমুদ ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনেও বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সাংসদ হন। তিনি বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইকবাল হাসান মাহমুদের স্ত্রী।

ফরিদপুর–২ আসনের প্রার্থী শামা ওবায়েদ বিএনপির প্রয়াত নেতা কে এম ওবায়েদুর রহমানের মেয়ে।

আফরোজা আব্বাস বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের স্ত্রী। তিনি জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি। সিলেট থেকে প্রার্থী হওয়া তাহসিনা রুশদীর (লুনা) নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী।
বগুড়ায় বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া মাছুদা মোমিন দলের সাবেক সাংসদ আবদুল মোমিনের স্ত্রী। মানিকগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী আফরোজা খানের বাবা সাবেক সাংসদ প্রয়াত হারুনার রশিদ খান (মুন্নু)।