আ.লীগ ও বিএনপিতে চাচা-ভাতিজার লড়াই

ফজলুল হক,মাহমুদুল হক
ফজলুল হক,মাহমুদুল হক

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-৩ (শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল হক নৌকা ও তাঁর ভাতিজা বিএনপির প্রার্থী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদুল হক ধানের শীষ নিয়ে ভোটের মাঠে। ভোটাররা মনে করছেন, চাচা-ভাতিজার মধ্যে লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি।
এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ২৫ হাজার ৫২০ জন। এর মধ্যে শ্রীবরদীতে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৩১৪ আর ঝিনাইগাতীতে ১ লাখ ২৫ হাজার ২০৬। এ আসনে ১টি পৌরসভা ও ১৭টি ইউনিয়ন রয়েছে।
দুই দলের কয়েকজন নেতা-কর্মী ও এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শেরপুর-৩ আসনে ১৯৯১ সালের নির্বাচনে মাহমুদুল হকের বাবা মরহুম সেরাজুল হক ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ১২ হাজার ৬১ ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুল হালিমকে পরাজিত করে নির্বাচিত হন। ১৯৯৪ সালের ২৮ অক্টোবর তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। তখন উপনির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে মাহমুদুল হক নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এম এ বারীর কাছে ৬ হাজার ৯০৮ ভোটের ব্যবধানে বিএনপির প্রার্থী মাহমুদুল হক পরাজিত হন। পরে ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মাহমুদুল হকের কাছে ২৮ হাজার ৩৯২ ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এম এ বারী পরাজিত হন। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফজলুল হক নৌকা প্রতীক নিয়ে ৪০ হাজার ৮৭৮ ভোটের ব্যবধানে মাহমুদুল হককে পরাজিত করেন। ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচন বয়কট করায় মাহমুদুল হক প্রার্থী হননি। পরে এ আসনে ফজলুল হকের আরেক ভাই হেদায়েতুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তাঁর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সেই নির্বাচনে ৮৭ হাজার ৬৮৬ ভোটের ব্যবধানে ফজলুল হক বিজয়ী হন।
দুই উপজেলার আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কয়েকজন নেতা-কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১০ বছর পর আবার চাচা-ভাতিজা ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। এই লড়াইয়ে কে জিতবেন, তা বলা যাচ্ছে না। তবে তাঁদের মধ্যে লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ভাতিজা মাহমুদুল হক আসনটি পুনরুদ্ধার করতে দুই উপজেলায় তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। আর চাচা ফজলুল হক আসনটি ধরে রাখতে দুই উপজেলার নেতা-কর্মীদের নিয়ে নির্বাচনী কর্মসূচি পালন করছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শ্রীবরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোতাহারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এলাকার সাংসদ ফজলুল হক দুই উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। তাই তাঁকে বিজয়ী করতে দুই উপজেলার আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে নির্বাচনী পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে, নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করতে সব নেতা-কর্মী একযোগে কাজ করছেন। আশা করি, এই নির্বাচনে ফজলুল হক বিজয়ী হবেন।’
তবে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঝিনাইগাতী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ আসনে মাহমুদুল হক একজন পরীক্ষিত নেতা। দুই উপজেলার ভোটাররা তাঁকে ভালোবাসেন। ধানের শীষকে বিজয়ী করতে নেতা-কর্মীদের নিয়ে একযোগে কাজ করছি। আশা করি, চাচাকে ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে ভাতিজাকে জয়যুক্ত করতে পারব। তবে এই আসনে চাচা–ভাতিজার লড়াই বেশ জমবে।’