আ.লীগের মিছিলে বোমা, ধানের শীষের কার্যালয়ে হামলা, বিএনপি প্রার্থীর গুলি

নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলায় আওয়ামী লীগের নির্বাচনী মিছিলে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। উপজেলা সদরের ইটাখালী বাজার এলাকায় বুধবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। ওই বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত ১০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। পরে এই ঘটনার প্রতিবাদে বের হওয়া মিছিল থেকে স্থানীয় বিএনপি প্রার্থীর কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়। ওই সময় গুলিও চালিয়েছেন বিএনপির প্রার্থী।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা সাতটার দিকে উপজেলা সদরের বুরজের বাজার এলাকা থেকে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের উদ্যোগে একটি নির্বাচনী মিছিল বের করা হয়। ওই মিছিল ইটাখালী এলাকায় এলে দুর্বৃত্তরা পর পর তিনটি হাতবোমা মিছিলে ছুড়ে মারে। এতে মিছিলে থাকা অন্তত ১০ নেতা-কর্মী আহত হন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আটপাড়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নিজাম ইয়ার খান, যুবলীগ নেতা সুফল খান, ছাত্রলীগ নেতা মোহন খান, শিবলু মিয়া ও ইমরানকে আটপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা ওই হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

এ ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিএনপিকে দোষারোপ করছেন। তবে বিএনপির নেতা-কর্মীরা তা অস্বীকার করেছেন। নেত্রকোনা-৩ (কেন্দুয়া-আটপাড়া) আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল। আর বিএনপির প্রার্থী কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ও কেন্দুয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম হিলালী।

আটপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অভিরঞ্জন দেব প্রথম আলোকে বলেন, ‘যাঁরা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন, তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে কেন্দুয়ায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী অসীম কুমার উকিলের সমর্থক ও আওয়ামী লীগের লোকজন একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করে। মিছিলটি থানাসংলগ্ন এলাকায় বিএনপির প্রার্থী রফিকুল ইসলাম হিলালীর রাজনৈতিক কার্যালয় ও বাসার সামনে দিয়ে গেলে মিছিল থেকে ইটপাটকেল ছোড়া হয়। এ সময় বেশ কয়েকজন দুর্বৃত্ত রফিকুলের কার্যালয় ও ব্যক্তিগত গাড়ি ভাঙচুর করে। রফিকুল একপর্যায়ে তাঁর ব্যক্তিগত পিস্তল ও শটগান দিয়ে ফাঁকা গুলি ছোড়েন।

রাত নয়টার দিকে এ বিষয়ে রফিকুল মোবাইল ফোনে প্রথম আলোকে জানান, দুর্বৃত্তরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাঁর বাসা ঘিরে রেখেছে। পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করছে। তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অসীম কুমার উকিলের মোবাইল ফোন বারবার ব্যস্ত থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।

কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমারত হোসেন গাজীর মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শাহজাহান মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে রওনা হয়েছি। শুনেছি, পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে এসেছে।’