আ.লীগ জিতবে ১৬৮ থেকে ২২০ আসনে

ফেসবুকে সজীব ওয়াজেদ জয়ের পোস্ট।
ফেসবুকে সজীব ওয়াজেদ জয়ের পোস্ট।

প্রধানমন্ত্রীর ছেলে এবং তাঁর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি–বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, বিভিন্ন জরিপ ও ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সালের নির্বাচনের তথ্য বিশ্লেষণ করার পর তাঁর বিশ্বাস, আওয়ামী লীগ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৬৮ থেকে ২২০টি আসনে জয়লাভ করবে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের চেয়েও বেশি ব্যবধানে এবার আওয়ামী লীগ জয়লাভ করবে।

নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে জয় এ কথা বলেন।

সজীব ওয়াজেদ জয় ওই পোস্টে বলেন, ‘এই বছরের আগস্ট থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত আমরা এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় জাতীয় জনমত জরিপটি করাই। নিরপেক্ষ গবেষণা সংগঠন রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (আরডিসি) দ্বারা এই জরিপটি পরিচালনা করা হয়। এ বছরের মেয়র নির্বাচনের জরিপটিও এই সংগঠনটিই করেছিল। আপনাদের হয়তো মনে আছে, আমার পেজ থেকে সেই জরিপটিও শেয়ার করি, যার ফলাফল নির্বাচনের ফলাফলের সঙ্গে মোটামুটি ভালোই মিলেছিল।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে জয় জানান, এই জরিপ ৫১টি নির্বাচনী আসনের ৫১ হাজার নিবন্ধিত ভোটারের সঙ্গে কথা বলে করা হয়েছে। অর্থাৎ, প্রতি আসনে অন্তত এক হাজার ভোটারের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত সব নির্বাচনের ফলাফল আমলে নিয়েই এই ৫১ আসনকে বৈজ্ঞানিকভাবে বেছে নেওয়া হয়েছে। এই আসনগুলোয় ভিন্ন ভিন্ন দলের জন্য সবচেয়ে বেশি ভোট দেওয়ার প্রবণতা দেখতে পাওয়া গেছে। এখানে সাধারণত জয়ের পার্থক্য সবচেয়ে কম থাকে। অর্থাৎ এই আসনগুলো নিয়েই দল সবচেয়ে বেশি চিন্তিত ছিল।

প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা বলেন, যেহেতু জরিপটি মনোনয়নপ্রক্রিয়ার আগে করা হয়েছিল, তাই প্রার্থীদের ব্যাপারে জনমত জানা যায়নি। কিন্তু দলগতভাবে ৫১টি আসনেই আওয়ামী লীগ এগিয়ে আছে। ১২ দশমিক ২ শতাংশ নিয়ে সবচেয়ে কম ব্যবধানে জয়ের সম্ভাবনা জয়পুরহাট-১ আসনে আর ৭৫ শতাংশ নিয়ে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়ের সম্ভাবনা বরিশাল-৪ আসনে। যাঁরা এখনো সিদ্ধান্ত নেননি, তাঁদের সবচেয়ে কম সংখ্যা দেখা যাচ্ছে টাঙ্গাইল-৩ আসনে, ২ দশমিক ৫ শতাংশ। এই আসনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে নিকটবর্তী দলের ব্যবধান ৪১ দশমিক ৫ শতাংশ। অন্যদিকে, ১৯ দশমিক ৮ শতাংশ নিয়ে সবচেয়ে বেশি সিদ্ধান্তহীনদের সংখ্যা সাতক্ষীরা-৩ আসনে, যেখানেও আওয়ামী লীগের জয়লাভের ব্যবধান ৬৪ দশমিক ৭ শতাংশ।

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি–বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, গড়ে আওয়ামী লীগের জন্য সমর্থন ৬৬ শতাংশ মানুষের, বিএনপির জন্য ১৯ দশমিক ৯ শতাংশ আর ৮ দশমিক ৬ শতাংশ ভোটার সিদ্ধান্ত নেননি। যাঁরা সিদ্ধান্ত নেননি, তাঁদের থেকে আওয়ামী লীগের সমর্থনের ব্যবধান অনেক বেশি। আরও গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি, তা হচ্ছে কোনো আসনেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির সমর্থনের পার্থক্য ১০ শতাংশের মধ্যে নেই। শুধু ২টি আসনেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির সমর্থনের পার্থক্য ২০ শতাংশ। এর মধ্যে ২৮টিতে অর্থাৎ অর্ধেকের বেশি জরিপকৃত আসনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির সমর্থনের পার্থক্য ৫০ শতাংশের বেশি। সমর্থনের পার্থক্য ১০ শতাংশের বেশি হলেই দ্বিতীয় দলটির জন্য তা পার করা মোটামুটি অসম্ভব হয়ে যায়। আর ২০ শতাংশের বেশি পার্থক্য থাকলে একাধিক ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দ্বারাও তা টপকানো সম্ভব হয় না।

জয় বলেন, এই ফলাফলগুলো বয়স ও লিঙ্গের ওপর নির্ভর করে বের করা হয়েছে, তাই মোট ফলাফল সর্বক্ষেত্রে শতভাগ নয়। আসন অনুযায়ী ‘মার্জিন অব এরর’ ৩ শতাংশ এবং আস্থা স্তর (Confidence Level) ৯৫ শতাংশ। সম্পূর্ণ ৫১ হাজার স্যাম্পলের ‘মার্জিন অব এরর’ শূন্য শতাংশ এবং আস্থা স্তর (Confidence Level) ৯৫ শতাংশ। তিনি বলেন, ‘এই জরিপগুলোর ওপর ভিত্তি করে এবং ১৯৯১-২০০৮–এর নির্বাচনের তথ্য বিশ্লেষণ করার পর আমার বিশ্বাস যে আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে ১৬৮ থেকে ২২০টি আসনে জয়লাভ করবে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের চেয়েও বেশি ব্যবধানে এবার আওয়ামী লীগ জয়লাভ করবে।’