ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীর দেখা পাচ্ছেন না নেতা-কর্মীরা

সৈয়দ মাহমুদ মোরশেদ
সৈয়দ মাহমুদ মোরশেদ

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনে প্রচারণার তুঙ্গে আছে আওয়ামী লীগ। আর আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীর খোঁজ জানেন না খোদ বিএনপির নেতা–কর্মীরা। এতে এ আসনে এক তরফা নির্বাচন হবে বলে মনে করছেন সাধারণ ভোটাররা।

গফরগাঁও আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সৈয়দ মাহমুদ মোরশেদকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এরশাদ সরকারের আমলে সৈয়দ মাহমুদ মোরশেদ গফরগাঁও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। পরবর্তী সময়ে দীর্ঘদিন  তিনি গফরগাঁওয়ের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। তরুণ প্রজন্মের ভোটাররা তাঁর সম্পর্কে তেমন কিছু জানেন না।

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও বিএনপি সূত্রে জানা যায়, ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য বিএনপির সব পর্যায়ের নেতা প্রস্তুত থাকলেও স্বয়ং প্রার্থীর খুব একটা খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। নির্বাচনের প্রচার শুরু হওয়ার পরও তিনি এলাকায় জোরেশোরে প্রচারণায় নামেননি। প্রচারণার পাঁচ দিনে তিনি কোনো জনসভা তো দূরের কথা, কোনো কর্মিসভাও করেননি।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, গফরগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিকুর রহমান ছিলেন গফরগাঁও আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী। এ আসনে তিনি ছাড়া আরও কয়েকজন মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। পরে সিদ্দিকুর রহমান ও আক্তারুজ্জামানকে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন দেওয়া হয়। তবে শেষ পর্যন্ত সৈয়দ মাহমুদ মোরশেদকে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়। মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ার পর সিদ্দিকুর রহমান গফরগাঁওয়ে নিজের বাড়িতে অবস্থান করছেন। বিএনপির নেতা-কর্মীরা প্রতিদিন তাঁর (সিদ্দিকুর) কাছে যাচ্ছেন। তিনি নেতা-কর্মীদের ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীর হয়ে মাঠে নামতে বলেছেন। কিন্তু প্রার্থীর পক্ষ থেকে তেমন কোনো সারা মিলছে না বলে কর্মীরা মাঠে নামতে পারছেন না।

বিএনপির কয়েকজন কর্মী বলেন, গফরগাঁও উপজেলায় এলডিপির কোনো কমিটি নেই। মাহমুদ মোরশেদ হচ্ছেন দলের একমাত্র ব্যক্তি। তাই বিএনপির কর্মীরা তাঁকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।

গফরগাঁওয়ের কয়েকজন সাধারণ ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীকে সাধারণ ভোটাররা চেনেন না। এ আসনে ঐক্যফ্রন্টে প্রার্থী হিসেবে বিএনপির পরিচিত কোনো প্রার্থী হলে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হতো।

উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘ঐক্যফ্রন্টের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে আমি ও আমার দল ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীর হয়ে কাজ করতে প্রস্তুত। তবে প্রার্থী নিজে খুব বেশি যোগাযোগ করছেন না। তিনি একবার ফোনে যোগাযোগ করেছিলেন।’ সৈয়দ মাহমুদ মোরশেদ অবশ্য নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘প্রচারণার প্রথম দিন থেকেই আমি এলাকায় অবস্থান করছি। প্রতিদিন গণসংযোগ করছি। তবে আমার বাড়ি উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় হওয়ায় অনেকের চোখে হয়তো পড়ছি না। বিএনপির নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করছি।’