সেনা মোতায়েনে কারও উচ্ছ্বসিত হওয়ার কারণ নেই: কাদের

ফেনীর দাগনভূঞায় নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখছেন ওবায়দুল কাদের। ছবি: প্রথম আলো
ফেনীর দাগনভূঞায় নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখছেন ওবায়দুল কাদের। ছবি: প্রথম আলো

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী মাঠে নেমেছে। তারা কোনো দলের বা পক্ষের নয়। সুতরাং এ নিয়ে কারও উচ্ছ্বসিত হওয়ার কারণ নেই। এই বাহিনীকে প্রশ্নবিদ্ধ কিংবা বিতর্কিত করে—এমন বক্তব্য থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে।

আজ সোমবার দুপুরে ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলা সদরের আতাতুর্ক উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এক নির্বাচনী জনসভায় ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। ফেনী-৩ আসনে মহাজোটের অংশীদার লাঙ্গল মার্কার প্রার্থী লে. জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর সমর্থনে এই জনসভার আয়োজন করা হয়।

জনসভায় ওবায়দুল কাদের বলেন, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে সিভিল প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে সেনাবাহিনী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে।

সেনা মোতায়েনের পর ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন ও মুখপাত্র বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে গতকাল গণমাধ্যমে বিবৃতি দেন। তাঁরা আশা প্রকাশ করে বলেন, সশস্ত্র বাহিনী ভোটে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিএনপির উদ্দেশে বলেন, নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থাকে বিতর্কিত করেছেন। সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করবেন না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দুটি ওয়াদা ছিল—ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া এবং গ্রামের রাস্তাঘাটসহ অবকাঠামো উন্নয়ন। সে ওয়াদা গত পাঁচ বছরে পালন করা হয়েছে। এবার দুটি ওয়াদা করা হচ্ছে—একটি হলো ঘরে ঘরে গ্যাস দেওয়া। অন্যটি প্রতি পরিবারে একজন বেকারকে চাকরি দেওয়া।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি কথার লোক, তারা কাজ করে না। তারা বাঙালকে হাইকোর্ট দেখায়। আওয়ামী লীগ হচ্ছে কাজের লোক। যা বলে, তা–ই করে। যারা জনগণের জন্য কাজ করে, তাদের ভোট দিতে হবে।

জনসভায় বিপুলসংখ্যক নারী ও তরুণ ভোটারের উপস্থিতি দেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাদু। আওয়ামী লীগের পক্ষে এখন গণজোয়ার। এটি শেখ হাসিনার ম্যাজিক। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারী ও তরুণেরাই আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করবে।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ভোটের দিন সকালে ভোটকেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা করার জন্য কেউ কেউ ওই দিন প্রস্তুতি নিতে পারে। তাই সংসদ নির্বাচনে যাতে কোনো অশুভ শক্তি প্রভাব ফেলতে না পারে, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, নেতারা এক হলে কর্মীরাও এক থাকেন। দাগনভূঞায় সব নেতা এক মঞ্চে উঠেছেন। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে মহাজোটের প্রার্থী মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীকে লাঙ্গল মার্কায় ভোট দিয়ে জেতাতে হবে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল উদ্দিনের জনসভায় সভাপতিত্ব করেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবদীন জনসভা সঞ্চালনা করেন। জনসভায় আরও বক্তব্য দেন ফেনী-২ আসনের সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারী, মহাজোটের প্রার্থী লে. জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক প্রটোকল কর্মকর্তা আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রহমান, দাগনভূঞা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল কবীর, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আসিফ চৌধুরী, উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক রবিউল হক প্রমুখ।