রবের চারটি নির্বাচনী কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ

ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী আ স ম রবের নির্বাচনী কার্যালয়ে আগুন জ্বলছে। গতকাল বেলা দেড়টায় কমলনগরের ফজুমিয়ারহাটে।  প্রথম আলো
ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী আ স ম রবের নির্বাচনী কার্যালয়ে আগুন জ্বলছে। গতকাল বেলা দেড়টায় কমলনগরের ফজুমিয়ারহাটে। প্রথম আলো

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী আ স ম আবদুর রবের চারটি নির্বাচনী কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রামগতির হারুন বাজার এলাকায় তাঁর দুই কর্মীকে মারধর করা হয়েছে। এ ছাড়া কমলনগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে তাঁর পাঁচ কর্মীকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত এসব হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার জন্য মহাজোট প্রার্থী মেজর (অব.) আবদুল মান্নানের সমর্থক আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কর্মীদের দায়ী করা হয় জেএসডির পক্ষ থেকে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সংশ্লিষ্ট নেতারা।

আ স ম রবের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট (সমন্বয়ক) আবদুল মোতালেব বলেন, গতকাল সকাল থেকে পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কর্মীরা একযোগে কমলনগরের বিভিন্ন এলাকায় তাণ্ডব চালান। কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ২০-২৫ জন কর্মী তোরাবগঞ্জ, চরকাদিরা ও চরমার্টিন এলাকায় মহড়া দেন। বেলা দেড়টার দিকে পুলিশের পরোক্ষ সহায়তায় তাঁরা চরকাদিরার ফজুমিয়ারহাটে আ স ম রবের নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। এর আগে তাঁরা তোরাবগঞ্জের ইসলামগঞ্জ বাজার, ফাজিল বেপারীরহাট ও রব বাজারে আরও তিনটি কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। এসব ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

আবদুল মোতালেব আরও জানান, গতকাল সকালে চরমার্টিন ও ফাজিল বেপারীরহাট এলাকা থেকে আ স ম রবের কর্মী মো. জাহাঙ্গীর, মো. নাছির, মো. সাবির হোসেন, আব্দুজ্জাহের ও আবদুস সহিদকে আটক করে পুলিশ। হাজিরহাট ইউনিয়নে মহাজোট প্রার্থী মেজর (অব.) আবদুল মান্নানের একটি নির্বাচনী কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। 

এদিকে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে রামগতি উপজেলার হারুন বাজার এলাকায় জেএসডির রামগতি উপজেলা যুব পরিষদের সহসাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের ও চরপোড়াগাছা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আলাউদ্দিনকে মারধর করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কর্মীরা।

হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে কমলনগর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মেজবাহ উদ্দিন বলেন, সকাল থেকে কয়েকটি মোটরসাইকেলে করে তাঁরা নৌকা মার্কার পক্ষে এলাকায় প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। ওই সময় আ স ম রবের কর্মীরা বিভিন্ন এলাকায় তাঁদের বাধা দেন। এতে করে কয়েকটি স্থানে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। তবে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের কোনো ঘটনা তাঁরা ঘটাননি। নিজেদের কার্যালয়ে ভাঙচুর করেন আ স ম রবের কর্মীরা এখন তাঁদের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন।

কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল হোসেন বলেন, নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় কয়েকটি এলাকায় মহাজোট ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। ওই সময় ফজুমিয়ারহাটে ও ইসলামগঞ্জ বাজারে আ স ম রবের দুটি নির্বাচনী কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

ওসি বলেন, কয়েক দিন আগে হাজিরহাট ইউনিয়নে মহাজোট প্রার্থী মেজর (অব.) আবদুল মান্নানের একটি নির্বাচনী কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গতকাল পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।