জাপা ও বিএনপির প্রচারে বাধা, পোস্টার নষ্ট

সাতক্ষীরা-১, ২ ও ৪ আসনে মহাজোটের শরিক দল জাতীয় পার্টিসহ বিএনপি জোটের প্রার্থীরা প্রচার ও প্রচারণা চালাতে পারছেন না বলে অভিযোগ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে সাতক্ষীরা-৪ আসনের ধানের শীষের প্রার্থীর স্ত্রী ও মেয়েকে। এসব বিষয়ে র‌্যাব, পুলিশ ও রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।

সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের বিএনপির প্রার্থী হাবিবুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, গতকাল মঙ্গলবার সকালে তালার সুভাষিণী থেকে জাতপুরে গণসংযোগের কর্মসূচি ছিল তাঁদের। গত সোমবার রাতে তালার পাটকেলঘাটায় মহাজোটের প্রার্থীর লোকজন তাঁদের নির্বাচনী অফিসে আগুন ধরিয়ে দিয়ে তাঁর নেতা-কর্মীদের নামে মামলা করেন। গতকাল সকাল থেকে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের সামনে হাতে লাঠি নিয়ে মোড়ে মোড়ে মহড়া দিয়েছেন সরকারদলীয় কর্মীরা। এ কারণে তিনি কোথাও গণসংযোগ করতে পারেননি। ইচ্ছা থাকার পরও তালায় গণসংযোগে যেতে পারেননি।

সাতক্ষীরা-২ (সদর) আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী মাতলুব হোসেন লিয়ন অভিযোগ করেন, আবাদের হাটখোলায় তাঁর কর্মীরা পোস্টার টাঙানোর জন্য গেলে শিবপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে আগড়দাড়ি ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন ও সহসভাপতি সফিকুল ইসলাম বেধড়ক মারধর করে লাঙ্গল প্রতীকের ৭০০ পোস্টার ছিনিয়ে যান।

এ সময় তাঁদের একটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করা হয়। সোমবার বাঁশদাহ ও রেয়ুই এলাকায় তাঁর প্রচার মাইক ভাঙচুর করা হয়েছে। হুমকির কারণে অনেকে তাঁকে মাইক ভাড়া দিতে চাচ্ছেন না।

একই আসনের ধানের শীষের প্রার্থী জামায়াত নেতা আবদুল খালেক কারাগারে আছেন। তাঁর পক্ষে জেলা জামায়াতের প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান অভিযোগ করেন, আগড়দাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা রোকেয়া খাতুন নামের তাঁদের একজন কর্মীকে মেরে কান ধরে ওঠবস করিয়েছেন। সোমবার রাতে চুপড়িয়া গ্রামে ধানের শীষের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। রাতে ধানের শীষের কর্মী আবদুর রহমানের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। কালিনি ছয়ঘোরিয়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেনকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে।

সাতক্ষীরা-৪ (শ্যামনগর ও কালীঞ্জের একাংশ) আসনের ধানের শীষের প্রার্থী জামায়াত নেতা জি এম নজরুল ইসলাম কারাগারে। তাঁর পক্ষে জেলা জামায়াতের প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান অভিযোগ করেন, জি এম নজরুল ইসলামের সঙ্গে কারাগারে তাঁর স্ত্রী মাকছুদা ইসলাম, মেয়ে শারমীন ফেরদৌস, নাতি শামছুল আরেফিন (৮) ও নাতনি নাঈমা সুলতানা (১০) দেখা করে ফিরে আসার সময় গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ মা–মেয়েকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁদের রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণার অভিযোগে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে।

তবে সাতক্ষীরার ডিবির পরিদর্শক আলী আহমেদ হাসেমী দাবি করেন, তাঁরা সাতক্ষীরা শহরের রাজারবাগান এলাকায় নাশকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে নারীদের জমায়েত করছিলেন। এ অভিযোগে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জামায়াত নেতা আজিজুর রহমান আরও অভিযোগ করেন, গতকাল সকাল সাড়ে সাতটার দিকে শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ী ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কর্মীরা ওই গ্রামের জোহর মোল্লা, হবি মোল্লা, বনি আমিন মোল্লা, আবদুস সালাম গাজী ও আনোয়ার হোসেনের বাড়িতে ভাঙচুর করে। এ সময় মফিজুর গাজীকে মারধর করা হয়। তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

জানতে চাইলে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুনসুর আহমেদ দাবি করেন, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা যেসব অভিযোগ করছেন তা ঠিক নয়। তাঁদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিরোধে এসব ঘটনা ঘটছে।

 আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁরা কোথাও আইন হাতে তুলে নেবে না, বরং তাঁরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে সহযোগিতা করবে।