কামরুন্নাহারের হাতে ধানের শীষ

কামরুন্নাহার শিরিন
কামরুন্নাহার শিরিন

নির্বাচনের আগমুহূর্তে নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত হয়েছে উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তে। এখানে দলটির প্রার্থী প্রয়াত প্রতিমন্ত্রী ফজলুর রহমানের স্ত্রী কামরুন্নাহার শিরিন।

জেলা বিএনপি সূত্রে জানা যায়, ভোটের ৯ দিন আগে (২০ ডিসেম্বর) ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী মুনজুরুল ইসলাম বিমলের ধানের শীষ প্রতীক বাতিল করে তা বিএনপি মনোনীত কামরুন্নাহার শিরিনকে দেওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। ঐক্যফ্রন্টের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে কামরুন্নাহার শিরিনের করা রিট আবেদনের শুনানি শেষে গত বৃহস্পতিবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। রিট আবেদনে বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী মুনজুরুল ইসলাম বিমলকেসহ নির্বাচন কমিশনের সচিব ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়। মুনজুরুল ইসলাম হাইকোর্টের ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজের আদালতে আবেদন করেন। গত সোমবার আবেদনের ওপর শুনানি হয়। শুনানি শেষে চেম্বার বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান হাইকোর্টের আদেশই বহাল রাখেন।

আদালতে কামরুন্নাহার শিরিনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফ ও আইনজীবী ফারজানা শারমিন। ফারজানা শারমিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দল একবার প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার পর তা পরিবর্তন করতে পারে না।

তবে মুনজুরুল ইসলাম জানান, তিনি বিএনপির প্রার্থী ছিলেন না। কামরুন্নাহারের দলীয় প্রার্থিতা বাতিল করে তাঁকে ঐক্যফ্রন্ট থেকে চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই। জোটবদ্ধ নির্বাচনের ক্ষেত্রে জোটের সিদ্ধান্তই নির্বাচন কমিশন মানতে বাধ্য। তবে কামরুন্নাহার যেহেতু আদালতে তাঁর দলের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করে রায় পেয়েছেন, তাই তা নিয়ে তাঁর কোনো মন্তব্য নেই। তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন।

উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তে এই আসনটিতে বিএনপির প্রার্থিতা নিয়ে নাটকীয়তার অবসান হলো ভোটের মাত্র ৫ দিন আগে। তবে দলটির প্রার্থী প্রচারণায় সময় পাবেন মাত্র ৪ দিন। এত অল্প সময়ে তাঁর পক্ষে ভোটারদের কাছে যাওয়া ও নেতা-কর্মীদের নির্বাচনমুখী করা কতটুকু সম্ভব হবে, তা নিয়ে জল্পনাকল্পনা শুরু হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার পুরাতন ঈশ্বরদী ইউনিয়ন বিএনপির এক নেতা বলেন, এ আসনটি বিএনপির জন্য সুবিধাজনক অবস্থায় ছিল। অথচ নিজেদের ভুলে বিজয় কঠোরতর করে ফেলল। এর পুরো সুবিধা যাবে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে।

উপজেলা বিএনপির একজন সাবেক নেতা জানান, নিজ দলের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে আদালত থেকে প্রার্থী হয়ে আসা বিএনপি প্রার্থীর জন্য সম্মান ও সুযোগ বয়ে আনবে না।

তবে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুণ অর রশিদ স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, প্রার্থিতা নিয়ে জটিলতা থাকলেও তাঁরা শুরু থেকেই নির্বাচনের মাঠে রয়েছেন। এ আসনটি বিএনপির ভোটব্যাংক। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যেতে পারলে ধানের শীষ বিজয়ী হবে।