ধানের শীষের প্রার্থীরা মাঠে নেই, ব্যস্ত ছিলেন নৌকার প্রার্থীরা

প্রচারণার শেষ দিনেও সাতক্ষীরায় কোনো প্রচারণায় ছিলেন না ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের। তবে মহাজোটের অধিকাংশ প্রার্থী সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন।

সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনে মহাজোটের প্রার্থী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা মুস্তফা লুৎফুল্লাহ সকালে তালার গণসাংস্কৃতিক কেন্দ্রে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। বেলা তিনটায় পাটকেলঘাটা এলাকায় করেন গণসংযোগ। সন্ধ্যায় কলারোয়া চন্দনপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও প্রচারণা চালান।

এই আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হাবিবুল ইসলাম হাবিব তিন দিন ধরে কোনো ধরনের প্রচারণা চালাতে পারেননি। তিনি বলেন, কোথাও তাঁর পোস্টার নেই, মাইক বের করলে ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। নেতা–কর্মীরা বাড়িতে থাকতে পারছেন না। পুলিশ ও আওয়ামী লীগের ভয়ে তালার নেতা-কর্মীরা খুলনা ও যশোর এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন। ফলে তিনি প্রচারণা চালাতে পারছেন না।

সাতক্ষীরা-২ (সদর) আসনের মহাজোটের প্রার্থী মীর মোস্তাক আহমেদ রবি বেলা সাড়ে তিনটায় সাতক্ষীরা শহরের শহীদ আব্দুল রাজ্জাক পার্কে সমাবেশ করেন। এ ছাড়া তিনি দিনের প্রথম ও শেষ ভাগে বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন।

এই আসনে ধানের শীষের প্রার্থী জেলা জামায়াতের আমির আবদুল খালেক গত জুন মাসে আদালতে আত্মসমর্পণ করে তাঁর বিরুদ্ধে থাকা ৩৮টি মামলায় জামিন প্রার্থনা করেন। আদালত তাঁকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সেই থেকে তিনি কারাগারে বন্দী। তাঁর পক্ষে জেলা জামায়াতের প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান বলেন, গতকাল তাঁদের কোনো ধরনের প্রচারণা ছিল না। তবে কৌশলে কয়েকটি স্থানে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনা করেছেন তাঁদের কর্মীরা।

সাতক্ষীরা-৩ (আশাশুনি, দেবহাটা ও কালীগঞ্জের একাংশ) আসনে মহাজোটের প্রার্থী ডা. আ ফ ম রুহুল হক গতকাল সকাল থেকে কালীগঞ্জের ভাড়াশিমুলিয়া, তারালি, চাম্পাফুল, বদরতলা ও নলতার একাধিক স্থানে গণসংযোগ করেন। বিকেলে নলতায় রোড শো করেছেন। এতে হাজার হাজার মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাস অংশ নেয়।

এই আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ডা. শহীদুল আলমের সম্ভাব্য দুইজন এজেন্টকে গতকালও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হুমকি-ধমকিতে তাঁরা মাঠে নামতে পারছেন না। তিন দিন ধরে তাঁরা কোনো ধরনের প্রচারণা চালাতে পারছেন না। শেষ দিনেও পারেননি।

সাতক্ষীরা-৪ (শ্যামনগর ও কালীগঞ্জের একাংশ) আসনের নৌকার প্রার্থী এস এম জগলুল হায়দার। তার ভাই এস এম জহুরুল হায়দার বলেন, বুধবার রাত থেকে উত্তেজনা থাকায় গতকাল সকালে তাঁরা প্রচার-প্রচারণায় যাননি। দুপুরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা শ্যামনগরে প্রচারণা চালানোর সময় কুলা প্রতীকের সমর্থকেরা তাঁদের ওপর হামলা চালান। এতে বাধা দিলে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন আহত হন। সন্ধ্যায় জগলুল হায়দার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন।

এই আসনে ধানের শীষের প্রার্থী জামায়াতের নেতা জি এম নজরুল ইসলাম ১৬ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। তাঁর পক্ষে জেলা জামায়াতের প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান বলেন, গতকাল তাঁরা কোনো প্রচার-প্রচারণা চালাননি। নেতা-কর্মীরা হুমকি-ধমকিতে বাড়িতে না থাকতে পারায় গণসংযোগ করতে পারেননি।

এ সব বিষয়ে জানতে চাইলে কালিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামিরুল হায়দার গতকাল প্রথম আলোকে কাছে দাবি করেন, পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না।