'আ.লীগও আমার মতো প্রার্থীকে ভয় পায়'

বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম নির্বাচন বর্জন করেছেন। আজ রোববার দুপুরে বগুড়ার একটি হোটেলে সাংবাদিকদের ব্রিফ করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন তিনি। হিরো আলম সিংহ প্রতীকে নির্বাচনে ছিলেন।
ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, সকাল থেকে বিভিন্ন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের লোকজন ভোটারদের বের করে দিয়েছে। নির্বাচনী এজেন্টদের বের করে দিয়েছে। নির্বাচনে নন্দীগ্রামে তাঁর ওপর হামলা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে কোনো সহায়তা করেনি।

হিরো আলম বলেন, ‘আওয়ামী লীগও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমকে দেখে ভয় পায়। ওরা আমার মতো প্রার্থী দেখে ভয় পায়। কেন্দ্র দখল আর হামলার ভোট আমি মানি না। ভোট বর্জন করলাম। এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হবে। ’

ভোট সুষ্ঠু হলে বিজয়ী হতে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন হিরো আলম। তিনি বলেন, নন্দীগ্রাম একাধিক ভোট কেন্দ্রে দুপুর ১২ টার আগেই ভোট ব্যালট হয়ে গেছে। এটা তো সুষ্ঠু ভোট নয়। বিভিন্ন কেন্দ্রে গিয়ে অভিযোগ পেয়েছি, ভোটারদের বলা হচ্ছে, নৌকা ছাড়া কোনো প্রতীকে ভোট দেওয়া যাবে না। নৌকায় ভোট না দিলে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে থাকার দরকার নেই বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত ২ ডিসেম্বর জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের প্রথম দিনেই হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। আপিল করলে নির্বাচন কমিশন শুনানির পর তা বাতিল করে। মনোনয়নপত্রে ভোটারের স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ তুলে আপিলেও তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে উচ্চ আদালতের তাঁর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়। পরে গত ১৫ ডিসেম্বর বগুড়ার রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমের হাতে পছন্দের 'সিংহ' প্রতীক তুলে দেন।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির ‘লাঙ্গল’ প্রতীকের মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচিত হিরো আলম। এরপর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে গত ২৮ নভেম্বর নন্দীগ্রাম উপজেলার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ইউএনও মোছা. শারমিন আখতারের কাছে বগুড়া-৪ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
এ আসনে মহাজোটের প্রার্থী জাসদের সাংসদ একেএম রেজাউল করিম তানসেন। তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। ধানের শীষ নিয়ে লড়ছেন মোশারফ হোসেন।
বগুড়া সদরের এরুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা হিরো আলম শৈশবে চানাচুর বিক্রি করতেন। পরে তিনি সিডি বিক্রি এবং ডিশ সংযোগের ব্যবসা দেন। নিজেই মিউজিক ভিডিও তৈরি করে ডিশ লাইনে সম্প্রচার শুরু করেন। এভাবে হিরো আলমের তৈরি মিউজিক ভিডিও এবং ইউটিউব সিনেমা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনায় আসেন। ‘মার ছক্কা’ নামে একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। বলিউড পরিচালক প্রভাত কুমারের ‘বিজু দ্য হিরো’ সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পান।

২০১৬ সালে হিরো আলমের সঙ্গে ছবি তুলে ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম ফেসবুকে প্রকাশ করেন। এ নিয়ে বিবিসি হিন্দি, জি নিউজ, এনডিটিভি, ডেইলি ভাস্কর, মিড-ডের মতো ভারতের প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমগুলো তাঁকে নিয়ে প্রতিবেদন করে। সেখানে হিরো আলমকে বাংলাদেশের বিনোদন জগতের তারকা বলে উল্লেখ করা হয়।
গুগলে কাকে সবচেয়ে বেশিবার খোঁজা হয়, তার একটি তালিকা করে ইয়াহু ইন্ডিয়া। জরিপে দেখা গেছে, ‘সুলতান’ ও ‘দাবাং’ তারকাখ্যাত সালমান খানের চেয়েও বেশিবার খোঁজা হয়েছে হিরো আলমকে। এবারের বাংলাদেশে নির্বাচনেও গুগল সার্চে শীর্ষে রয়েছেন হিরো আলম।