খেলাপি ঋণ আদায়ের প্রক্রিয়া জোরদার করতে হবে

বাজেট
বাজেট

সরকারি দলের সাংসদ আলী আশরাফ বলেছেন, খেলাপি ঋণ আদায়ের প্রক্রিয়া জোরদার করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়ে অনেকের প্রশ্ন আছে। এই সংস্থাটির কার্যক্রম স্বচ্ছ হতে হবে।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে আলী আশরাফ এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার থেকে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রথম দিন ১২ জন সাংসদ আলোচনায় অংশ নেন। তবে সরকারি দলের প্রায় সব সদস্যই প্রস্তাবিত বাজেটকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এবং সমালোচকদের সমালোচনা করেছেন।

গত বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন।

আলী আশরাফ বলেন, অনেকে ঋণ নিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে খেলাপি হচ্ছেন। তাঁদের ছাড় দেওয়া যাবে না। প্রশাসন, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকি জোরদার করা প্রয়োজন। শোনা যায়, নানাভাবে টাকা পাচার হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়েও অনেকের প্রশ্ন আছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হয়ে গেছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত ব্যাংকের কাউকে আইনের আওতায় আনা হয়নি। সতর্ক থাকতে হবে, এটা জনগণের টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যক্রম স্বচ্ছ হতে হবে। বস্তুনিষ্ঠ বাস্তবভিত্তিক প্রচেষ্টা নিতে হবে।

আলী আশরাফ বলেন, বাজেট নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। এ বছর প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে ৮ দশমিক ১৩ ভাগ। অনেকে শঙ্কা প্রকাশ করেন, প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব নয়। কিন্তু প্রবৃদ্ধির এ হার অর্জন করা যাবে। দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি অত্যন্ত স্থিতিশীল। এবার যে বাজেট দেওয়া হয়েছে, তা বড় বাজেট নয়। বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ বাজেট। তিনি রাজস্ব আয় বাড়াতে উপজেলা পর্যায়ে দ্রুত আয়কর কার্যালয় চালু করার প্রস্তাব দেন।

সরকারি দলের সদস্য আবদুল মান্নান বলেন, বিএনপির একজন স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে এক ব্যক্তির নাম দিয়ে বক্তব্য শুরু করেছিলেন। জিয়াউর রহমানের জীবদ্দশায় এ ধরনের কোনো দাবি করেছেন তার কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারলে তিনি সংসদ থেকে পদত্যাগ করবেন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস কীভাবে ছিলেন, তার ব্যাখ্যা এখনো দেননি। যেসব মা-বোন মুক্তিযুদ্ধে সম্ভ্রম হারিয়েছিলেন, তাঁদের বীরাঙ্গনা বলা হয়। খালেদা জিয়াকে কী নামে ডাকবেন, তা মানুষ বুঝতে পারছেন না।

সরকারি দলের আরেক সাংসদ পঙ্কজ নাথ বলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে যাঁরা প্রশ্ন করেন তাঁরা দেশ ও জনগণের শত্রু। যাঁরা আওয়ামী লীগকে সহ্য করতে পারেন না, বঙ্গবন্ধুকন্যাকে পছন্দ করেন না, তাঁরাই বাজেট নিয়ে সমালোচনা করেন।

ওয়ার্কার্স পার্টির নারী সাংসদ লুৎফুন্নেসা খান সংরক্ষিত নারী আসনগুলোতে প্রত্যক্ষ নির্বাচন, নারীর গৃহস্থালি কাজের স্বীকৃতি জিডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করার এবং মাদক নিরাময়কেন্দ্রে কর রেয়াত দেওয়ার দাবি জানান।

সরকারি দলের সদস্য হাবিবে মিল্লাত বলেন, অনেকে টক শোতে গিয়ে বাজেটের সমালোচনা করছেন। কিন্তু কেউ বলতে পারেন না ঠিক কোন জায়গায় সমস্যা। যাঁরা বাজেটের সমালোচনা করেন তাঁরা আগামী বছর থেকে বিকল্প বাজেট উপস্থাপন করবেন বলে তিনি আশা করেন।

হাবিবে মিল্লাত বলেন, এমপিওভুক্তি নিয়ে তাঁরা অস্বস্তিতে আছেন, এলাকায় যেতে পারেন না, বিব্রত হন। একবার বলা হয়, তালিকা দেওয়ার জন্য। আবার বলা হয়, সাংসদদের তালিকা চলবে না। তিনি এমপিওভুক্তির জন্য সাংসদদের সঙ্গে আলোচনা ও তাঁদের পরামর্শ নেওয়ার জন্য শিক্ষামন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান। এ ছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে ভর্তুকি বাড়ানোর প্রস্তাব করেন।

অন্যদের মধ্যে সরকারি দলের সাইফুজ্জামান, বিএনপির মোশাররফ হোসেন, সংরক্ষিত নারী আসনের অ্যারমা দত্ত, খালেদা খানম, সৈয়দা রুবিনা আক্তার, শেখ অ্যানি রহমান প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।