ছেলেধরা গুজবে সরকারি হুঁশিয়ারি

সন্দেহজনক ঘটনা অথবা গুজবের ভিত্তিতে কোনো নিরীহ মানুষকে হত্যা করার বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি জারি করেছে সরকার। ছেলেধরা সন্দেহে সাম্প্রতিক হতাহত হওয়ার কয়েকটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে সোমবার একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এ ধরনের ঘটনা হবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, একটি স্বার্থান্বেষী মহল গুজব ছড়িয়ে ছেলেধরা সন্দেহে নিরীহ মানুষ পিটিয়ে হতাহত করছে। এ–সংক্রান্ত খবরের প্রতি সরকারের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত যেকোনো ধরনের গুজব ছড়ানো ও আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া দেশের প্রচলিত আইনের পরিপন্থী এবং গুরুতর দণ্ডনীয় অপরাধ। কোনো বিষয়ে কাউকে সন্দেহজনক মনে হলে নিজের হাতে আইন তুলে না নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে ৯৯৯ নম্বরে কল করে পুলিশের সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে দুদিন আগে রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় ছেলেধরা সন্দেহে এক নারীকে পিটিয়ে মারার ঘটনায় পুলিশ চারজনকে আটক করেছে। আদালত তাঁদের তিনজনকে চার দিনের পুলিশ রিমান্ডে দিয়েছে। পুলিশ তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ধীমান চন্দ্র মণ্ডল চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে সারা দেশে থানাসহ সব পুলিশ অফিসে অভ্যন্তরীণ সার্কুলার জারি করেছে। সব পুলিশ ইউনিটকে টহল জোরদার এবং সব বিদ্যালয়ের সামনে প্রহরা জোরদার ও স্কুলশিক্ষক, সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অভিভাবকদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এতে স্কুল ছুটির পর ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকদের সঙ্গে বাড়ি ফিরে যাওয়া নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিতে স্কুল কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তর থেকে স্কুল চত্বর ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টিরও আহ্বান জানানো হয়েছে। এর আগে ২০ জুলাই পুলিশ সদর দপ্তর থেকে ছেলেধরা গুজবের বিরুদ্ধে জনগণকে সতর্ক করে দিয়ে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, এ ধরনের গুজবের ঘটনায় সন্দেহভাজন কাউকে ধরে পুলিশের হাতে না দিয়ে পিটিয়ে হতাহত করা আইনের দৃষ্টিতে মারাত্মক অপরাধ। এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়।