তাসলিমাকে গণপিটুনির পর হত্যা, মূল হোতা গ্রেপ্তার

তাসলিমা বেগম
তাসলিমা বেগম

রাজধানীর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগমকে পিটিয়ে হত্যায় নেতৃত্ব দেওয়া অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে নারায়ণগঞ্জের ভূলতা থেকে ওই তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার তরুণের নাম ইবরাহীম হোসেন হৃদয় (১৯)। তাঁর বাড়ি উত্তর বাড্ডার হাজিপাড়ায়। তিনি উত্তর বাড্ডা বাজারে সবজি বিক্রি করতেন। ডিবি জানিয়েছে, বিভিন্ন ফুটেজ দেখে হৃদয়কে তারা এই হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা বলে চিহ্নিত করেছেন।

ডিবির (পূর্ব) সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার নাজমুল হাসান প্রথম আলোকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। এ নিয়ে তাসলিমা হত্যাকাণ্ডে আট ব্যক্তি গ্রেপ্তার হলেন। 


ডিবি সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পরপরই হৃদয় এলাকা ছাড়েন। তাঁর ব্যাপারে ডিবি প্রথমে উত্তর বাড্ডার কাঁচাবাজারে খোঁজ নেন। সেখানকার ব্যবসায়ীরা জানান, হৃদয় রূপগঞ্জ থেকে সবজি কিনতেন। এরপর রূপগঞ্জের বিভিন্ন সবজির দোকানে ছবি দেখিয়ে হৃদয়ে খোঁজ নেয় ডিবি। সেখান থেকে তাঁরা জানতে পারেন, তিনি রূপগঞ্জে নানির বাড়িতে আছেন। পরে নানির বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, হৃদয় ভূলতায় তাঁর খালাবাড়িতে আছেন। পরে ওই খালার বাড়িতে থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত শনিবার সকালে বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছেলেধরা গুজবে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয় তাসলিমা বেগমকে। তিনি ওই স্কুলে তাঁর দুই সন্তানের ভর্তির বিষয়ে খোঁজ নিতে গেলে গিয়েছিলেন। স্কুলের ফটকে কয়েকজন নারী তাসলিমার নাম-পরিচয় জানতে চান। পরে লোকজন তাসলিমাকে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে নেন। কিছুক্ষণের মধ্যে বাইরে কয়েক শ লোক একত্র হয়ে তাসলিমাকে প্রধান শিক্ষকের কক্ষ থেকে বের করে নিয়ে যায়। স্কুলের ফাঁকা জায়গায় এলোপাতাড়ি মারপিট করে গুরুতর জখম করে। পরে উদ্ধার করে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় তাসলিমার বোনের ছেলে সৈয়দ নাসির উদ্দিন বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় অজ্ঞাতনামা চার থেকে পাঁচ শ মানুষকে আসামি করে মামলা করেছেন।