'যা লইবেন দশ ট্যাকা'

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই বাজারে ১০ টাকায় কী পাওয়া যায়? রাস্তার ধারে এক কাপ চা খেতেও ১০ টাকা খরচ হয়। অনেকেই বলবেন, ১০ টাকায় এখন আর তেমন কিছু্ই মেলে না। কিন্তু রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ এলাকায় দু–একটি অস্থায়ী দোকানে ১০ টাকার বিনিময়ে পাওয়া যায় অনেক কিছু। এই দোকানগুলোতে শতাধিক পণ্য রয়েছে—যার প্রতিটির দাম মাত্র ১০ টাকা। এক টাকা বেশিও নয়, কম নয়।

কী নেই এসব দোকানে! স্টেশনারি পণ্য থেকে শুরু করে সাজসজ্জার পণ্য—সবই পাওয়া যাচ্ছে এখানে। বিক্রি হচ্ছে কয়েক ধরনের চিরুনি, ব্রাশ, আয়না, কলম, পেনসিল, টেস্টার, আঠা, নেইল কাটার, অ্যান্টিকাটার, কাঁচি, ব্যাটারি, ব্লেড, রেজর, মাপার ফিতা, সুই ও সেফটিপিনের সেট, এক প্যাকেট কটনবাড ও টুথপিক, টেপ, সাবানের কেস, কলমদানি, চায়ের ছাঁকনি, খেলার বল, চাবির রিংসহ অনেক কিছু।

১০ টাকায় বিভিন্ন পণ্য কিনছেন পথচারীরা। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ, ঢাকা, ২৫ আগস্ট। ছবি: আবদুস সালাম
১০ টাকায় বিভিন্ন পণ্য কিনছেন পথচারীরা। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ, ঢাকা, ২৫ আগস্ট। ছবি: আবদুস সালাম

আজ রোববার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ এলাকায় গিয়ে এমন দুটি দোকানের খোঁজ পাওয়া গেল। এগুলো ‘১০ টাকার দোকান’ নামে পরিচিত। দোকানিরা পণ্যগুলোর পসরা সাজিয়ে বসেছেন। ক্রেতাকে আকৃষ্ট করতে অবিরাম হাঁকডাক দিয়ে যাচ্ছেন, ‘দেইখা লন, বাইছা লন, যা লাইবেন ১০ ট্যাকা, ১০ টাকা, ১০ টাকা...’।

ছয় বছর ধরে ১০ টাকার পণ্যের ব্যবসা করছেন বিক্রেতা আজম খান। কথা হলো তাঁর সঙ্গে। আজম জানালেন, প্রতিটি পণ্য থেকে লাভ হয় দুই থেকে তিন টাকা। বিক্রি বেশি, তাই লাভ বেশি। আজমের কথা, ‘আমার পুঁজি ১০ হাজার টাকা। প্রতিদিন তিন থেকে চার হাজার টাকার পণ্য বিক্রি হয়। দৈনিক ৩০০ পণ্য বিক্রি হলে ৯০০ টাকা লাভ থাকে।’ বিক্রেতারা প্রতিদিন চকবাজার থেকে বাছাইকৃত পণ্য কেনেন।

১০ টাকার দোকানে পাওয়া যায় শতাধিক পণ্য। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ, ঢাকা, ২৫ আগস্ট। ছবি: আবদুস সালাম
১০ টাকার দোকানে পাওয়া যায় শতাধিক পণ্য। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ, ঢাকা, ২৫ আগস্ট। ছবি: আবদুস সালাম

বগুড়া থেকে ঢাকা বেড়াতে এসেছেন স্বপন উদ্দিন প্রামাণিক। ‘১০ টাকার দোকানে’ গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা। স্বপন বললেন, ‘ফুটপাত দিয়ে যাচ্ছিলাম, দেখলাম অনেক ধরনের পণ্য বিক্রি হচ্ছে, দাম মাত্র ১০ টাকা। তাই কিনলাম।’ তিনি আরও জানালেন, এখানে ১০ টাকায় বিক্রি হলেও অনেক জায়গায় একই পণ্য ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়।

শিক্ষার্থী ফায়জা আফরিন নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় আসেন কোচিং করতে। বললেন, ‘এখানকার জিনিসগুলো অনেক সস্তা, তাই আমিও বেশ কয়েকটি জিনিস কিনলাম।’