৫৫ বছর পর চালু হচ্ছে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথ

ভারতের সঙ্গে রেল সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের কাজের উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। চিলাহাটি, নীলফামারী, ২১ সেপ্টেম্বর। ছবি: প্রথম আলো
ভারতের সঙ্গে রেল সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের কাজের উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। চিলাহাটি, নীলফামারী, ২১ সেপ্টেম্বর। ছবি: প্রথম আলো

প্রায় ৫৫ বছর পর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথ আবারও চালুর উদ্যোগ নিয়েছে দুই দেশ। আজ শনিবার ওই পথে ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও কাজের উদ্বোধন করেছেন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন।

রেলপথমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের চিলাহাটি ও ভারতের হলদিবাড়ি হয়ে পুরোনো যে রেললাইনটি ছিল, সেটা ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের সময় বন্ধ হয়ে যায়। এই রেলপথ পুনরায় চালুর কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

চিলাহাটি রেলস্টেশন চত্বরে এ উদ্বোধন কার্যক্রম উপলক্ষে আজ শনিবার দুপুরে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. মজিবর রহমান।

অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী বলেন, আগামী জুন মাসের মধ্যে এই রেলপথ নির্মাণের কাজ শেষ হবে। তখন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই রেললাইনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাস বলেন, শিয়ালদহ, রানাঘাট, ভেড়ামারা, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ, সান্তাহার, হিলি, পার্বতীপুর, নীলফামারী, চিলাহাটি, হলদিবাড়ি, জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি হয়ে এই পথে আগে ‘দার্জিলিং মেইল’ নামে একটা ট্রেন চলত। সেটারই আদলে এই পথে আবারও দুই দেশের মধ্যে রেল চালু হবে। এটি সময়োপযোগী ও জরুরি উদ্যোগ।

রীভা গাঙ্গুলী বলেন, ‘আমাদের দুই দেশের সম্পর্কে সোনালি অধ্যায় চলছে। এই পথের মাধ্যমে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারসহ দুই দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে।’

নীলফামারী-২ সদর আসনের সাংসদ ও রেলপথবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আসাদুজ্জামান নূর বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতার আসার পর থেকে রেলে প্রাণসঞ্চার হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এই রেলপথকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। এই রেলপথের মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক আরও উচ্চতায় পৌঁছাবে।

জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, চিলাহাটি রেলস্টেশন থেকে সীমান্ত পর্যন্ত ৬ দশমিক ৭২৪ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণে সরকারের ব্যয় হচ্ছে ৮০ কোটি ১৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। আগামী বছরের জুনের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন হওয়ার কথা আছে। এরপর ভারত–বাংলাদেশ ট্রেন চলাচল পুনঃস্থাপন সম্ভব হবে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, ভারতের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ রেলওয়ে চিলাহাটি থেকে সীমান্ত পর্যন্ত ৬ দশমিক ৭২৪ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের জরিপ শেষ করেছে গত আগস্ট মাসে। ২ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার লুপ লাইনসহ ৯ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হচ্ছে বাংলাদেশ অংশে। অন্যদিকে, হলদিবাড়ি থেকে হলদিবাড়ি সীমান্ত পর্যন্ত ৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার রেলপথ স্থাপনের কাজ ইতিমধ্যে শেষ করেছে ভারতীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নীলফামারী-১ আসনের সাংসদ আফতাব উদ্দিন সরকার, সংরক্ষিত মহিলা সাংসদ রাবেয়া আলীম, পশ্চিমাঞ্চল রেলের মহাব্যবস্থাপক মো. হারুন অর রশীদ প্রমুখ।