অজয় রায়ের মরদেহ বারডেমে দেওয়া হবে

অধ্যাপক অজয় রায়। ছবি: প্রথম আলো
অধ্যাপক অজয় রায়। ছবি: প্রথম আলো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক অজয় রায়ের (৮৪) শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তাঁর মরদেহ গবেষণার জন্য রাজধানীর বারডেম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দান করা হবে। আনুষ্ঠানিকতা শেষে আগামীকাল মঙ্গলবার মরদেহটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন অজয় রায়। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা অসুখে ভুগছিলেন এই প্রবীণ অধ্যাপক।

অজয় রায়ের ছোট ছেলে অনুজিৎ রায় আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী অজয় রায়ের মরদেহটি বারডেম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে গবেষণার জন্য দান করা হবে। মরদেহটি এখন বারডেম হাসপাতালে ফ্রিজিং করে রাখা হয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল নয়টায় মরদেহ অজয় রায়ের বেইলি রোডের বাসভবনে নেওয়া হবে। সেখান থেকে বেলা ১১টার দিকে নেওয়া হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে মরদেহটি সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ঘণ্টাখানেক রাখা হবে। এরপর দুপুর ১২টার দিকে মরদেহটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে নেওয়া হবে। সেখান থেকে জগন্নাথ হলে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বারডেম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।

অধ্যাপক অজয় রায়ের ছেলে ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায় ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির উল্টো পাশে দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত হন।

অজয় রায় ১৯৩৫ সালের ১ মার্চ দিনাজপুরে জন্মগ্রহণ করেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধ-উত্তর বাংলাদেশের প্রায় সব গণতান্ত্রিক ও নাগরিক আন্দোলনের সামনের কাতারের মানুষ। তাঁর স্কুল ও কলেজজীবন কেটেছে দিনাজপুরেই। ১৯৫৭ সালে এমএসসি পাস করে যোগ দেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। তিনি ১৯৫৯ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগে শিক্ষকতা করেছেন। তিনি ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডের লিডস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬৭ সালে সেখানেই করেন পোস্ট ডক্টরেট। ১৯৬৭ সালে শিক্ষক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পুনরায় যোগদান করেন এবং অবসর নেওয়ার আগ পর্যন্ত সেখানেই কর্মরত ছিলেন।

দেশি-বিদেশি বহু জার্নালে অজয় রায়ের নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন। তিনি সম্প্রীতি মঞ্চের সভাপতি, বাংলাদেশ ইতিহাস পরিষদের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং এশিয়াটিক সোসাইটির বিজ্ঞান বিভাগের সম্পাদক ছিলেন। ২০১২ সালে পদার্থবিজ্ঞানে একুশে পদক লাভ করেন অজয় রায়।