১৬ ছাত্রের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

অধ্যক্ষকে টেনেহিঁচড়ে পুকুরের পানিতে নিক্ষেপের ঘটনায় রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সাবেক ও বর্তমান ১৬ ছাত্রের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। প্রায় দুই সপ্তাহ আগে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের কাছে পলিটেকনিক কর্তৃপক্ষ এই সুপারিশ পাঠায়। দু-এক দিনের মধ্যেই সুপারিশগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ইনস্টিটিউটের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাউন্সিলের সুপারিশ অনুযায়ী চার শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কার, প্রাক্তন পাঁচ শিক্ষার্থীর মূল সদনপত্র আগামী তিন বছর আটকে রাখা ও সাত শিক্ষার্থীকে টিসি (ট্রান্সফার সার্টিফিকেট) দিয়ে অন্য কোনো ইনস্টিটিউটে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে রাজশাহী পলিটেকনিকে রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ রাখারও সুপারিশ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরিদর্শক মো. আবদুল কুদ্দুস সরদার আজ শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ের রয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যেই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মিডটার্মে অকৃতকার্য ও ক্লাসে অনুপস্থিত থাকা দুই শিক্ষার্থীকে চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিনের ওপর চাপ দেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ নিয়ে গত ২ নভেম্বর কার্যালয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে তাঁদের কথা-কাটাকাটি হয়। এরই জের ধরে ওই দিন দুপুরে অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করে টেনেহিঁচড়ে ক্যাম্পাসের ভেতরের একটি পুকুরের পানিতে ফেলে দেন ছাত্রলীগ নেতা–কর্মীরা। এ নিয়ে মামলা করেন অধ্যক্ষ। এতে সাতজনের নাম উল্লেখসহ ৫০ জনকে আসামি করা হয়।

অধ্যক্ষকে পুকুরে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাউন্সিলের সভায় তদন্ত কমিটির সদস্যসচিব মুস্তাফিজুর রহমান তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এই কমিটির দেওয়া প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে ওই সভায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশে বলা হয়েছে, এই প্রতিষ্ঠানে ছাত্ররাজনীতি চলমান রেখে সুষ্ঠুভাবে একাডেমিক কার্যক্রম চালানো অসম্ভব। এ কারণে আগামী পাঁচ বছর এখানে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের সুপারিশ করা হয়। এ ছাড়া ছাত্রলীগের টর্চার সেল হিসেবে পরিচিত ১১১৯ নম্বর কক্ষটি ভেঙে ছাত্র কমনরুম বৃদ্ধিরও সুপারিশ করা হয়েছে।

পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সভার এসব সিদ্ধান্ত কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ প্রথম আলোকে জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের তিন রকম শাস্তির জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। বোর্ড কোনো সিদ্ধান্ত নিয়েছে কি না, তাঁরা জানতে পারেননি।

এ ঘটনার মূল হোতা কামালসহ মোট ১৮ জন গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।