ইমনকে হত্যার পর ১০ লাখ টাকা চায় 'খুনিরা'

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার কামতাল এলাকার স্কুলছাত্র রকিবুল হাসান ইমনকে হত্যা করে পাঁচজন। এরপর তার মৃত্যুর বিষয়টি গোপন করে মুক্তিপণ বাবদ ১০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায় নেতৃত্ব দেন নিহত ইমনের চাচাতো ভাই আল আমিন।
হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আল আমিন গতকাল শুক্রবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আর তাঁর দুই সহযোগী সাইদুর রহমান ও শাহজাহান ওরফে জীবনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
নিহত ইমন কামতাল মালিভিটা গ্রামের সৌদিপ্রবাসী নূর ইসলামের ছেলে। সে সোনারগাঁ উপজেলার মোগড়াপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীতে পড়ত।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার মোর্শেদ জানান, বন্দরে চাঞ্চল্যকর ইমন হত্যা মামলায় আটক তিন আসামি আল আমিন, সাইদুর রহমান ও শাহজাহান ওরফে জীবনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গতকাল ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে পাঠানো হয়। এ সময় আল আমিন হত্যাকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তি দেবেন বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) হাকিমকে জানান। পরে তিনি জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মনোয়ারা বেগমের কাছে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বন্দর থানাধীন কামতাল তদন্ত কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই হাকিম জানান, আল আমিন আদালতের কাছে স্বীকার করেছেন, তিনি ও তাঁর চার বন্ধু সিদ্ধান্ত নেন ইমনকে অপহরণের পর হত্যা করে মুক্তিপণ দাবি করবেন। মুক্তিপণের টাকা পেলে তাঁরা আর যোগাযোগ করবেন না। সে পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২৯ জানুয়ারি রাতে ইমনকে এক জায়গায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে আল আমিন তাকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ওঠান। আল আমিন বেশ কিছু রাস্তা ঘুরিয়ে লাঙ্গলবন্দে একটি ট্রাক্টর কারখানার পেছনে নির্জন জায়গায় ইমনকে নিয়ে যান। সেখানে আগে থেকেই বসা ছিলেন সাইদুর, জীবন ও অন্য দুই বন্ধু। এ সময় ইমন কান্নাকাটি শুরু করে। তাঁরা ইমনকে হত্যা করে লাশ চটের বস্তায় ভরে ডোবায় পুঁতে রাখেন। এ সময় তাঁদের জামাকাপড়ে রক্ত ও কাদা লাগলে সবাই বাড়ি ফিরে গোসল করে জামাকাপড় ধুয়ে ফেলেন। আল আমিন ইমনের মায়ের সঙ্গে সারা রাত ইমনকে খুঁজে বেড়ান। পরের দিন ইমনের খোঁজে মসজিদে মাইকিং করে এবং নিজে রিকশা চালিয়ে মাইকিং করে ইমনকে খুঁজে বেড়ান।