'গরু তো আর সীমান্ত চেনে না'

দুদিনে তিন দফা পতাকা বৈঠকের পর আজ শনিবার বিকেলে ৪০০ গরু ও ভেড়া ফেরত পাঠানো ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। রাজশাহীর পবা উপজেলার দশ নম্বর চর এলাকা দিয়ে ভারতীয় সীমানায় ঢুকে পড়ার অভিযোগ তুলে গত বুধবার গরু ও ভেড়াগুলো নিয়ে আটকে রাখে বিএসএফ।

এ প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বিজিবি-১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক বলেন, ‘গরু তো আর সীমান্ত চেনে না!’

পবা উপজেলার হরিয়ান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মফিদুল ইসলাম জানান, গত বুধবার দশনম্বর চর এলাকায় গরু চরানোর সময় বিএসএফ ৪০২টি গরু ও ৩০টি ভেড়া ধরে নিয়ে যায়। এর মধ্যে চরখিদিরপুর এলাকার ইয়াদুল্লাহর ১১০টি গরু ও ১৫ ভেড়া, বাবু নামের একজন কৃষকের ১০২টি গরু, একই নামে (বাবু) আরেকজন কৃষকের ৭০টি গরু ও নাজির নামের আরেকজন কৃষকের ৬৫টি গরু রয়েছে। এই কৃষকেরা তাঁর নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা। ভারতীয় সীমান্তের শূন্যরেখা থেকে তাদের গরু ও ভেড়াগুলো বিএসএফ ধরে নিয়ে যায়। এই চার দিনে অনেক গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ নিয়ে গতকাল শুক্রবার একবার বিজিবি-বিএসএফ এর মধ্যে পতাকা বৈঠক হয়েছে। আজ সকালে ও বিকেলে দুই দফা বৈঠকে হয়েছে। তারপর বিকেল চারটার দিকে গরু-ভেড়াগুলোকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সন্ধ্যায় বিজিবি-১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক ফেরদৌস জিয়াউদ্দিন মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, গরু তো আর সীমান্ত চেনে না। ঘাস খেতে খেতে হয়তো ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় ঢুকে পড়েছে। আমাদের সীমান্তের মতো ভারতীয় সীমান্তে এত বেশি বসতি নেই। তাদের গো-চারণ ভূমি আমাদের চেয়ে অনেক বেশি। এ জন্য অনেক সময় আমাদের রাখালেরা ইচ্ছে করেও ভারতীয় সীমান্তে ঘাস খাওয়ানোর জন্য গরু ঢুকিয়ে দিতে পারে। তবে চুয়াত্তরের মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি অনুযায়ী গরু-মহিষ সীমান্ত অতিক্রম করলে আলোচনার মাধ্যমে প্রকৃত মালিক চিহ্নিত করে তাকে ফেরত দিতে হবে। আটকে রাখার নিয়ম নেই, কিন্তু বিএসএফের পক্ষ থেকে পতাকা বৈঠকে তাদের বলা হয়েছে যে বাংলাদেশ থেকে গরু ভারতীয় এলাকায় ঢুকে ফসল খেয়েছে। যাদের ফসল খেয়েছে তারা গরু ও ভেড়াগুলোকে ধরে নিয়ে বিএসএফকে জানিয়েছে।

ফেরদৌস জিয়াউদ্দিন মাহমুদ বলেন, বিএসএফ এখন ফসলের ক্ষতিপূরণ চাচ্ছে। এখন তারাও পরবর্তী বৈঠকে দেখবে কী ক্ষতির হিসাব তারা দেয়।