হামিদা, রীনার পর পারভীনেরও দাফন হলো ধর্মীয় রীতিতে

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া যৌনপল্লিতে পারভীন সুলতানা (৫৫) নামের আরেক বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার মধ্যরাতে নিজ ঘরেই তিনি মারা যান। দীর্ঘদিন ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন। আজ শনিবার দুপুরে জানাজা শেষে তাঁকে দাফন করা হয়।

এর আগে ২ ফেব্রুয়ারি দৌলতদিয়া যৌনপল্লির প্রবীণ বাসিন্দা হামিদা বেগমের জানাজা ও দাফন করা হয় ধর্মীয় রীতিতে। সচরাচর এমনটা না হওয়ায় সে ঘটনা বেশ আলোচিত হয়। এরপর গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে যৌনপল্লির প্রবীণ বাসিন্দা রীনা বেগমের মৃত্যু হয়। ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী তাঁকেও দাফন করা হয়। অথচ কিছুদিন আগেও সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল অন্য রকম। কোনো যৌনকর্মীর মৃত্যু হলে মাটিচাপা দেওয়া, নদীতে লাশ ভাসিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটত।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল তায়াবীর জানান, আজ সকালে তাঁদের কাছে যৌনপল্লির পারভীন সুলতানা নামের এক বাড়িওয়ালির মৃত্যুর খবর আসে। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমানকে জানানো হয়। তাঁর নির্দেশক্রমে বেলা দুইটায় জানাজা শেষে যৌনপল্লি–সংলগ্ন নির্ধারিত কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। জানাজায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শেখ শরিফুজ্জামান, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল তায়াবীর, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য জলিল ফকিরসহ দেড় শতাধিক লোক। জানাজা পড়ান গোয়ালন্দ ঘাট থানা মসজিদের ইমাম মাওলানা আবু বক্কার সিদ্দিক।

স্থানীয় ব্যক্তিদের ভাষ্যমতে, সাত-আট বছর আগেও পল্লির কেউ মারা গেলে চুপিসারে স্থানীয়ভাবে জানাজা হতো। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আসত সামাজিক বাধা।

দৌলতদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বলেন, এর আগেও কিন্তু কিছু জানাজা হয়েছে। তবে তা ছিল অনেকটা চুপিসারে। কিন্তু এখন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ধর্মীয় রীতি মেনে যৌনকর্মীদের সমাহিত বা সৎকার করা হবে। এ জন্য ইউপি থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে।