গয়াল পরিবারে নতুন অতিথি
দেখতে অনেকটা বাছুরের মতো। শরীরের রং বাদামি। মায়ের গা ঘেষে দাঁড়িয়ে আছে। মাঝে মাঝে মা আদর করে দিচ্ছে সন্তানকে। গতকাল মঙ্গলবারের এই চিত্র গাজীপুরের শ্রীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের গয়ালদের পালে। ওই দিন সকালে প্রথমবারের মতো বাচ্চাটি দেখতে পায় কর্তৃপক্ষ।
পার্ক কর্তৃপক্ষের ধারণা, গতকাল ভোর রাতের দিকে বাচ্চাটির জন্ম হয়ে থাকতে পারে। ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় পার্কের কোর সাফারিতে গিয়ে দেখা মেলে গয়াল পরিবারের সর্বশেষ সদস্যেকে। কোর সাফারির সবুজ ঘাসের বিছানায় মা ও বাচ্চাটি নতুন সৌন্দর্য ছড়াচ্ছিল। সদ্যোজাত বাচ্চাটি মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে আছে। মা গয়ালটি বারবার বাচ্চাকে আদর করছে, গা চেটে দিচ্ছে। বাচ্চাটি একটু একটু এগোতে চেষ্টা করছে। মাঝে মাঝে সে দু-এক কদম সামনে যাচ্ছে। এ নিয়ে পার্কে গয়ালের সংখ্যা হলো ৮ টি। নতুন গয়ালটি ছেলে না মেয়ে, সেটি এখনো জানা যায়নি।
পার্কের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক আনিসুর রহমান জানান, গয়াল বছরে একটি বাচ্চাই প্রসব করে। তবে গরুর মতো কখনো কখনো দুটি বাচ্চা দেওয়ার রেকর্ডও রয়েছে। গয়াল ২৭৫ দিন গর্ভকালীন সময় পার করে শাবকের জন্ম দেয়। ২-৩ বছরে এরা প্রাপ্তবয়স্ক হয়। গয়াল ৩০ বছর পর্যন্ত বাঁচে। একটি পুরুষ গয়ালের ওজন এক হাজার কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে পার্কের গয়াল ৬০০ থেকে ৭০০ কেজির বেশি না। গয়ালকে ভারতের কিছু কিছু জায়গায় মিথুন নামে ডাকা হয়। ভারতের বিভিন্ন বনে এখনো এদের দেখা মেলে।
পরিদর্শক বলেন, পার্কে গয়ালগুলো হরিণ সাফারিতে বিভিন্ন প্রজাতির হরিণের সঙ্গে একত্রে বসবাস করে। গয়াল সাধারণত কচি ঘাস খেতে বেশি পছন্দ করে। এদের প্রধান খাদ্য ঘাস ও সবজি। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় করে গাজর, ভুসি, মিষ্টি কুমড়া দেওয়া হয়। গয়াল এক টন পর্যন্ত ওজন হয়ে থাকে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) তবিবুর রহমান বলেন, উপযুক্ত পরিবেশ পেয়ে বেশ কিছু বিরল প্রাণী সাফারি পার্কে বাচ্চার জন্ম দিয়েছে। গয়ালের পরিবারেও নতুন এক অতিথি পাওয়া গেছে। নতুন বাচ্চাকে আমরা বিশেষভাবে যত্ন করছি। এ নিয়ে পার্কে তিনটি গয়াল জন্ম নিল।