পঞ্চগড়ে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকাদের জন্য পুলিশের উপহার

‘বাসায় থাকুন, সুস্থ থাকুন—কোয়ারেন্টিন মেনে চলার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ’ লাল ব্যাগের ওপর সাদা কাগজে এমন লেখাসংবলিত উপহারসামগ্রীর ব্যাগ নিয়ে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের বাড়িতে হাজির হচ্ছে পুলিশ। 

বিদেশফেরত হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের উৎসাহ জোগাতে এবং তাঁদের মনোবল ঠিক রাখতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পঞ্চগড় জেলা পুলিশ।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলীর নেতৃত্বে কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে উপহারসামগ্রী বিতরণের কার্যক্রম শুরু হয়। আজ বৃহস্পতিবার দিনভর চলে বিতরণ কার্যক্রম। বিকেল পর্যন্ত মোট দেড় শ ব্যক্তিকে এই উপহার পৌঁছানো হয়েছে। কোয়ারেন্টিনে থাকা সব ব্যক্তিকেই এই উপহার পৌঁছানো হবে বলে জানায় পুলিশ।
পুলিশ ও উপহার পাওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ব্যাগের ভেতর একটি সাবান, ডিটারজেন্ট পাউডারের একটি প্যাকেট, একটি টুথব্রাশ, একটি টুথপেস্ট, একটি হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং একটি টয়লেট টিস্যু পেপার রয়েছে।
এ ছাড়া হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা প্রায় ৭০০ জনকে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে মুঠোফোনে কল দিয়ে একাধিকবার খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
জেলা পুলিশ জানায়, ১ থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত মোট ৯৭০ জন বিদেশ থেকে পঞ্চগড়ে এসেছেন। তাঁদের মধ্যে ৯০৪ জন ভারত থেকে এবং ৬৬ জন ইতালি, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কাতার, সৌদি আরব, দুবাই, সুদান, দক্ষিণ কোরিয়া, নেদারল্যান্ডস, দক্ষিণ আফ্রিকা, গ্রিস, উগান্ডা ও চীন থেকে এসেছেন। বর্তমানে ৩৬৮ জন ব্যক্তি হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। বাকি ৬০২ জনের কোয়ারেন্টিনের মেয়াদ শেষ হয়েছে।
জেলা শহরের রাজনগর এলাকার বাসিন্দা আবদুল ওয়াদুদ মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি সম্প্রতি ভারত থেকে দেশে ফিরেছি। হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা অবস্থায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে আমাকে একাধিকবার ফোন করে খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আমি তো পুলিশের উপহার পেয়ে অবাক হয়েছি। কারণ ১৪ দিনের একাকিত্বে এমন উপহার পাওয়া সত্যিই অনেক আনন্দের।’
শহরের ধাক্কামারা এলাকার বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম বলেন, পুলিশ কর্মকর্তাদের আকস্মিকভাবে উপহার নিয়ে বাড়িতে আসাটা ছিল বেশ আনন্দের। পুলিশের এই উদ্যোগ কোয়ারেন্টিনে থাকার একঘেয়েমিকে অনেকটা দূর করে দিয়েছে।
পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বলেন, ‘একটা মানুষ ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার পাশাপাশি তাঁর শারীরিক সমস্যা হচ্ছে কি না, এমন ভাবনা থেকে পুলিশের পক্ষ থেকে আমাদের এই সামান্য উদ্যোগ। আশা করি, এই উদ্যোগ কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের যথাযথভাবে কোয়ারেন্টিন পালনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।’