মে মাস পর্যন্ত চা-শ্রমিকদের সবেতনে ছুটি দাবি

করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে চা-শ্রমিকদের সুরক্ষায় মে মাস পর্যন্ত সবেতনে ছুটি ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন চা-বাগান ছাত্র ও যুব সংগঠনের নেতারা। ছুটির দাবিতে চা-শ্রমিক সংগঠনের পর আজ রোববার যৌথ বিবৃতিতে তাঁরা করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় আগামী মে মাস পর্যন্ত টানা দুই মাসের ছুটি ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন।

বিবৃতিদাতা চা-বাগানের প্রতিনিধিরা হলেন, চা বাগান শিক্ষা অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের প্রধান সংগঠক সঞ্জয় কান্ত দাস, অধীর বাউরী, শান্ত বাউরী, লস্করপুর চা-বাগানের প্রসাদ চৌহান, খান চা-বাগানের রনি ঘোষ, লালচান চা-বাগানের রনি যাদব, লাক্কাতুরা চা-বাগানের মনু লোহার, মালনীছড়া চা-বাগানের বাদল বাউরী, প্রদীপ সবর, কৃষ্ণ নায়েক, সাগর নায়েক, সানু দাস, তারাপুর চা-বাগানের হৃদয় মুদি, গুলনি চা-বাগানের সাজু ওড়াং, যতীন সিং, ছড়াগাঙ্গ চা-বাগানের নেপাল ছত্রী, হিলুযাছড়া চা-বাগানের সজীব কুর্মী, বড়জান চা-বাগানের তাপস নায়েক, দ্বীপ গোয়ালা, হাবিব নগর চা-বাগানের প্রসেনজিৎ সিং ছত্রী, কেওয়াছড়া চা-বাগানের সঞ্জীত দাস, খাদিম চা-বাগানের আদিত্য বুনার্জী, লালাখান চা-বাগানের উজ্জ্বল বুনার্জী, সুমন মৃধা, গঙ্গারজুম চা-বাগানের বাজেন গোয়ালা, বাগছড়া চা-বাগানের অর্জুন বুনার্জী, বিজয় সিং, করিমপুর চা-বাগানের প্রদীপ নাইডু, বরমচাল চা বাগানের রামজিত দাশ, নিতাই, শঙ্খ, বেগমখানের উৎপল বাক্তি, নালুয়া চা বাগানের লিটন মুন্ডা,গিলানী চা-বাগানের বাবলু তন্তুবায়, লালচাঁদ চা-বাগানের ওম প্রকাশ বাউরী, কাপাই চা-বাগানের সঞ্জয় সাঁওতাল, আমু চা-বাগানে সরল বুনার্জী।

বিবৃতিতে এই নেতারা দাবি করেন, গত ৩১ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সে দেওয়া বক্তব্য চা-শ্রমিক স্বার্থের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। এ প্রসঙ্গে তাঁরা বলেছেন, প্রতিবেশী দেশ ভারত যখন ৮৮১টি চা-বাগান বন্ধ রেখেছে, তখন বাংলাদেশের ১৬৬টি চা-বাগান বন্ধ রাখার দাবি ওঠে। তবে ৩১ মার্চ গণভবন থেকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, চা পাতা দূরত্ব বজায় রেখে তোলা হয়। এখানে কোনো অসুবিধা নেই। তাঁরা (চা-শ্রমিক) প্রকৃতির মধ্যেই থাকেন, সেখানে সংক্রামিত হওয়ার সুযোগ নেই। সিলেটের চা-বাগান চালু রাখা যেতে পারে। এই বক্তব্য চা-শিল্প ও চা-শ্রমিকের স্বার্থের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়।

চা-শিল্প একটি শ্রমঘন শিল্প আর এই শিল্পের প্রাণ চা-শ্রমিক। এ বিষয়টি উল্লেখ করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, চা-পাতা তোলার পর তা ওজন করতে হয় সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে। কাজের সেকশনগুলোতে যে ছাউনি আছে, সেখানে এক সঙ্গে বসে দুপুরের খাবার খেতে হয়। শ্রমিক লাইনে ছোট ছোট চায়ের দোকান আছে, যেখানে জনসমাগম লেগেই থাকে। আবার সরকার নিজেই বলছে, করোনাভাইরাস এখন বাংলাদেশে ‘কমিউনিটি ট্রান্সমিশন’ (গণহারে আক্রান্ত) পর্যায়ে আছে। অর্থাৎ এখনই ছড়াবে বেশি। এ জন্য চলতি এপ্রিল ও মে মাস বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের মাত্রা মহামারি আকারে ছড়াতে পারে আশঙ্কা রয়েছে। অন্তত এই দুই মাস চা-বাগানের শ্রমিকদের সবেতনে ছুটি দিয়ে ঘরে থাকা কার্যকর করতে প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন নেতারা।