ডলফিন হত্যার ঘটনা তদন্ত করে ১৫ জুনের মধ্যে জানাতে নির্দেশ হাইকোর্টের

চট্টগ্রামের হালদা নদীতে ডলফিন হত্যা রোধ, পরিবেশ, জীববৈচিত্রসহ সব ধরনের মা মাছ রক্ষায় গঠিত কমিটি কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ১৫ জুনের মধ্যে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিস্টদের এ বিষয়ে আদালতকে অবহিত করতে বলা হয়েছে। বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় হালদা নদীতে ডলফিন হত্যা রোধে করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯ মে হাইকোর্ট হালদা নদীতে ডলফিন হত্যা রোধ, পরিবেশ, জীববৈচিত্রসহ সব ধরনের মা মাছ রক্ষায় সংশ্লিষ্ট দপ্তর, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন। একই সঙ্গে ২৮ মে আদেশের জন্য পরবর্তী দিন রাখেন আদালত। এর ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি আদালতে ওঠে।

আদালতে রিটের পক্ষে আবেদনকারী আইনজীবী এম আব্দুল কাইয়ুম নিজেই শুনানিতে অংশ নেন।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও অমিত তালুকদার।

আদালতের আদেশে আরও বলা হয়, রিট আবেদনকারী আইনজীবী এম আব্দুল কাইয়ুম ২৪ মে ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার–এ প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন। এই প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, ১২ মে পর আরও একটি ডলফিন হত্যা করা হয়েছে। এ বিষয়ে যথাযথ তদন্ত করে কমিটিকে ওই তারিখের মধ্যে (১৫ জুন) আদালতকে অবগত করতে নির্দেশ দেওয়া হলো। ১৮ জুন বিষয়টি আদেশের জন্য কার্যতালিকায় থাকবে।

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় হালদা নদীতে ডলফিন হত্যা রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে ১১ মে রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম আব্দুল কাইয়ুম। পরদিন ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতিতে শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন। সেদিন আদালত হালদায় আর যাতে ডলফিন শিকার বা হত্যা না হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় ১৯ মে বিষয়টি আদালতে ওঠে। সেদিন হাইকোর্ট ‘হালদা নদীর ডলফিন হত্যা রোধ, প্রাকৃতিক পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য এবং সকল প্রকার মা মাছ রক্ষা কমিটি’ নামে কমিটি গঠন করে দেন। আদালত বলেন, হালদা নদীতীরবর্তী এলাকার সাংসদেরা এই কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করবেন। কমিটি তাদের উপদেশ অনুসারে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক কমিটির সভাপতি হবেন।

বৃহস্পতিবার আদেশের পর এম আব্দুল কাইয়ুম প্রথম আলোকে বলেন, হালদা নদীতে ২৪টি ডলফিন মারা যায়। এরই প্রেক্ষাপটে বিপন্নপ্রায় ওই সব ডলফিন রক্ষায় নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়। এর অনেকগুলো হত্যার শিকার বলে হালদা গবেষকদের বরাতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে। তবে এর মধ্যে ২৪ মে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ কেজি ওজনের আরেকটি ডলফিন মৃত অবস্থায় মদুনাঘাট এলাকায় উদ্ধারের খবর পাওয়া যায়। এ বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হলে শুনানি নিয়ে আদালত ওই আদেশ দেন।

রাশেদ চিশতীর জামিন স্থগিতই থাকছে
১৫৯ কোটি টাকা অর্থ পাচারের অভিযোগে করা মামলায় ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেডের উদ্যোক্তা পরিচালক ও অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতীর ছেলে রাশেদুল হক চিশতীর জামিন স্থগিতই থাকছে। নিয়মিত বেঞ্চে শুনানি না হওয়া পর্যন্ত সময়ের জন্য তার জামিন স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতিতে শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এর আগে ওই মামলায় ১৯ মে ঢাকার একটি আদালত তাঁকে জামিন দিয়েছিলেন। এই জামিন আদেশের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন হাইকোর্টে আবেদন করে। এর ওপর শুনানি নিয়ে ২০ মে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ ২৮ মে পর্যন্ত রাশেদুল হক চিশতীর জামিন স্থগিত করে আদেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি শুনানির জন্য ওঠে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাশেদুলের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন, যুক্ত ছিলেন আইনজীবী মো. শাহরিয়া কবির।

পরে খুরশীদ আলম খান প্রথম আলোকে বলেন, ১৮ ও ১৯ মে পৃথক চার মামলায় রাশেদুল হক চিশতী ঢাকার আদালত থেকে জামিন পান। ১৫৯ কোটি টাকা অর্থ পাচারের ওই মামলায় ১‌৯ মে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ থেকে জামিন পান তিনি। এই জামিন স্থগিত চেয়ে দুদক হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করে। ওই মামলায় এর আগে হাইকোর্ট ২৮ মে পর্যন্ত তাঁর জামিন স্থগিত করেন। আজ নিয়মিত আদালতে শুনানি না হওয়া পর্যন্ত রাশেদুল হকের জামিন স্থগিতের মেয়াদ বৃদ্ধি করেছেন হাইকোর্ট। ফলে রাশেদুল চিশতী আপাতত মুক্তি পাচ্ছেন না। দুদক ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল গুলশান থানায় ওই মামলাটি করে। অপর তিনটি মামলায় রাশেদুল চিশতীর জামিনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছে।