বাহরাইনে আটকে পড়াদের জন্য দূতাবাসের উদ্যোগ

রাষ্ট্রদূত নজরুল ইসলাম
রাষ্ট্রদূত নজরুল ইসলাম

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবের ফলে বিশ্বজুড়ে অচলাবস্থা। এক দেশের সঙ্গে অন্য দেশের উড়োজাহাজ চলাচল প্রায় বন্ধ। এতে বিভিন্ন দেশে আটকা পড়েছেন অনেক বিমানযাত্রী। জরুরি হলেও অনেকেই ফিরতে পারছেন না দেশে কিংবা প্রবাসে নিজের কর্মস্থলে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাহরাইন দূতাবাস বাংলাদেশ ও বাহরাইনে আটকে পড়া প্রবাসীদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে।

বাহরাইনে বাংলাদেশ দূতাবাসের ফেসবুক পেজে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, যাঁরা শারীরিকভাবে গুরুতর অসুস্থ কিংবা পারিবারিক জরুরি প্রয়োজনে দেশে ফিরতে চান, তাঁদের দেশে ফেরার ব্যবস্থা করবে দূতাবাস। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রদূত নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা জেনেছি, বাহরাইনে বেশ কিছু বাংলাদেশি অসুস্থ আছেন এবং কেউ কেউ পারিবারিক সমস্যার কারণে দেশে যেতে যাচ্ছেন। তাঁদের কথা মাথায় রেখে আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। এ দেশের বাদশা বাংলাদেশিদের প্রতি অত্যন্ত সদয়। এলএমআরের প্রধানও আমাদের জানিয়েছেন, বাংলাদেশি কারও ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাঁদের দেশে পাঠানো হবে না। এরপরও যাঁদের দেশে যাওয়া খুব জরুরি, তাঁদের দেশে ফেরানোর জন্য আমরা এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আমরা বাংলাদেশ বিমান অথবা গালফ এয়ার ভাড়া করে একটি বিশেষ ফ্লাইটের মাধ্যমে ওই সব ব্যক্তিকে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করব। যাত্রীরা বিমান ভাড়া নিজেরা পরিশোধ করবেন।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমরা এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলছি এবং ৫ জুনের মধ্যে আমরা সবাইকে নিজেদের নাম নিবন্ধন করতে বলেছি। ইতিমধ্যে ১০০ জন নিবন্ধিত হয়েছেন, আমরা ১৬৫ অথবা ৩৫০ জনকে পাঠানোর ব্যবস্থায় যাচ্ছি। আশা করি আমরা শিগগিরই তাঁদের দেশে পাঠাতে পারব। আমাদের এই উদ্যোগ বিশেষভাবে যাঁরা অসুস্থ কিংবা পারিবারিক সমস্যার মধ্যে আছেন, তাঁদের জন্য। তবে যাঁরা একেবারে চলে যেতে চাচ্ছেন বা ছুটিতে যেতে চাচ্ছেন, তাঁদের নরমাল ফ্লাইট অপারেশন চালু হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’

রাষ্ট্রদূত নজরুল বলেন, ‘করোনার কারণে যাঁরা কাজ হারিয়েছেন বা বর্তমানে কাজ নেই, তাঁদের জন্য আমরা কর্মসংস্থানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করি, শিগগির  তাঁদের কাজের ব্যবস্থা হবে। আর বাংলাদেশে যাঁরা ছুটিতে গিয়ে আটকা পড়েছেন, তাঁদের ব্যাপারে বাহরাইন সরকারের সুনির্দিষ্ট একটি নীতিমালা আছে। যাঁদের ভিসার মেয়াদ এখনো শেষ হয়নি, তাঁরা আমাদের ভাড়া করা ফিরতি ফ্লাইটে আসতে পারবেন। ফিরতি ফ্লাইটে শুধু যাঁদের ভিসার মেয়াদ আছে, তাঁরা আসতে পারবেন। আর যাঁদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাঁরা তাঁদের নিজ নিজ স্পনসরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। ওই স্পনসর ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করলে বাহরাইনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আবেদন গ্রহণ করলে তাঁদের একটি নম্বর দেওয়া হবে, এই নম্বরের মাধ্যমে তাঁরাও বাহরাইনে ঢুকতে পারবেন।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘যাঁরা বাহরাইনের ফ্লেক্সি ভিসায় ছিলেন, তাঁরা বাংলাদেশ থেকে অনলাইনে ফ্লেক্সিতে আবেদন করলে এবং তাঁরা তা গ্রহণ করে সময়সীমা বাড়িয়ে দিলে এই ফ্লেক্সি ভিসাধারীরাও আসতে সক্ষম হবেন। এই তিন ক্যাটাগরির ব্যাপারে বাহরাইনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ করেছি এবং তারা অনুমোদন দিয়েছেন।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘যদি আমরা বাংলাদেশ বিমান ভাড়া করি, তাহলে বিমানটি ঢাকা থেকেই আসবে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশে আটকে পড়া অভিবাসীরা ওই বিমানে করেই চলে আসতে পারবেন। আর যদি এখান থেকে গালফ এয়ার ভাড়া করা হয়, তাহলে ওই বিমানের ফিরতি ফ্লাইটে তাঁরা আসতে পারবেন। আমরা শিগগিরই এ ব্যাপারে একটি তারিখ নির্ধারণ করব। তখন আগ্রহীরা আমাদের জানিয়ে দেওয়া যোগাযোগের মাধ্যমে নিবন্ধিত হবেন।’

দূতাবাসের জিমেইল অ্যাড্রেস দেওয়া হয়েছে। এতে যোগাযোগ করে নিবন্ধিত হতে হবে। ইতিমধ্যে ১০০ জনের নিবন্ধিত হয়ে গেছেন।

বাংলাদেশে যেতে আগ্রহীরা ছুটিতে থাকা প্রবাসীরা তাঁদের মোবাইল নম্বর এবং অতি জরুরি অবস্থার বর্ণনা করে এবং সেই-সংক্রান্ত কাগজপত্র-প্রমাণাদিসহ দূতাবাসের এই ই-মেইল ঠিকানায় ([email protected]) যোগাযোগ করতে অথবা এই 38007274 নম্বরে হোয়াটসঅ্যাপে কল করার অনুরোধ করা হয়েছে।

বিএনপি,