'ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন' সার্ভিস শুরু শুক্রবার

কাল শুক্রবার থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহী-ঢাকা রুটে চালু হচ্ছে একটি ‘ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন’। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী থেকে আমসহ অন্য পার্সেল পরিবহনের জন্য ট্রেনটি প্রথমবারের মতো চালু করা হচ্ছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (পাকশী) ফুয়াদ হোসেন রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।

আম সংগ্রহ, পরিবহন ও বাজারজাতকরণ নিয়ে গত ২০ মে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, আম পরিবহনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ট্রেন চলবে। এর আগে করোনা পরিস্থিতিতে আম, লিচু ও অন্য মৌসুমি ফল বিপণন এবং কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণ বিষয়ে ১৬ মে ভিডিও কনফারেন্সে চাষি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। সেদিনই ট্রেনে আম পরিবহনের কথা ওঠে। এরপর রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পশ্চিম রেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী ট্রেনে আম পরিবহনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবারই প্রথম আম পরিবহনের জন্য স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা করা হলো।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ফুয়াদ হোসেন জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে যখন ঢাকা যাবে, তখন ট্রেনটির নাম হবে ‘ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন-২’। আর ঢাকা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ফেরার পথে নাম হবে ‘ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন–১’। ট্রেনটি প্রতিদিন চলাচল করবে। প্রতিদিন চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বিকেল ৪টায় ছেড়ে আসবে। রাজশাহী পৌঁছাবে ৫টা ২০ মিনিটে। এখানে ৩০ মিনিট থেমে ৫টা ৫০ মিনিটে যাত্রা শুরু করবে। এরপর ঢাকায় পৌঁছাবে রাত ১টায়। ঢাকা থেকে ট্রেনটি রাত ২টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে আসবে। রাজশাহী পৌঁছাবে সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে। এখানে ২০ মিনিট থেমে ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। পৌঁছাবে সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে।

ট্রেনটিতে মোট ছয়টি ওয়াগন থাকবে। প্রতিটি ওয়াগনে ৪৫ হাজার কেজি আম নেওয়া যাবে। তবে শুধু আম নয়; সব ধরনের শাকসবজি, ফলমূল, ডিমসহ কৃষিপণ্য, বাড়ির আসবাব এবং রেলওয়ের আইনে পার্সেল হিসেবে বহনযোগ্য সব সামগ্রী বহন করা হবে।

ফুয়াদ হোসেন জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে এসে ট্রেনটি আমনূরা বাইপাস, কাঁকনহাট, রাজশাহী, সরদহ, আড়ানি ও আব্দুলপুর বাইপাস স্টেশনে থামবে। এসব স্থানে আমসহ পার্সেল পণ্য ট্রেনে তোলা হবে। টাঙ্গাইল, মির্জাপুর, কালিয়াকৈর, জয়দেবপুর, টঙ্গী, বিমানবন্দর, ক্যান্টনমেন্ট, তেজগাঁও ও কমলাপুর স্টেশনে ট্রেনটি থামবে। এই স্থানগুলোতে পণ্যগুলো খালাস করা হবে। ফেরার পথে ট্রেনটি তেজগাঁও, টঙ্গী, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ এম মনসুর আলী, চাটমোহর ও রাজশাহী স্টেশনে থামবে। তবে যাত্রাপথে কোথাও সাধারণ যাত্রী এ ট্রেনে তোলা হবে না। আমসহ অন্য পার্সেল তুলেতে কুলিদের জন্য ভাড়াও নির্ধারণ করা হয়েছে।

ট্রেনটিতে রাজশাহী স্টেশন থেকে এক কেজি আম ঢাকার বিমানবন্দর, তেজগাঁও বা কমলাপুরে নিতে খরচ পড়বে ১ টাকা ১৮ পয়সা। আর চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে এক কেজি আমের ভাড়া লাগবে ১ টাকা ৩১ পয়সা। রেলওয়ের নিয়ম অনুযায়ী, ট্রেন ছাড়ার আগে যে কেউ তাঁদের মালামাল বুকিং দিতে পারবেন।

সংবাদ সম্মেলনে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা আহছান উল্ল্যা ভূঁইয়া ও রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক আবদুল করিম উপস্থিত ছিলেন।