বোদায় গুদামে ঢুকে ব্যবসায়ীকে মারধর করলেন কাউন্সিলর

বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ব্যবসায়ী তৌহিদুর রহমান। ছবি: প্রথম আলো
বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ব্যবসায়ী তৌহিদুর রহমান। ছবি: প্রথম আলো

পঞ্চগড়ের বোদা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শাহজাহানের বিরুদ্ধে তৌহিদুর রহমান নামের এক ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে পৌরসভার সাতখামার এলাকায় ব্যবসায়ী তৌহিদুরের ধানের গুদামে এ ঘটনা ঘটে। আহত ব্যবসায়ীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত ব্যবসায়ীর পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।

আহত ব্যবসায়ীর পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিকেলে ধান ব্যবসায়ী তৌহিদুর সাতখামার এলাকায় তাঁর ধানের গুদামে বসা ছিলেন। এ সময় পৌর কাউন্সিলর শাহজাহান সেখানে গিয়ে একটি স্টিলের অ্যাঙ্গেল দিয়ে তৌহিদুরকে বেধড়ক মারধর শুরু করেন। এতে তাঁর মাথা ফেটে যায়। স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে তৌহিদুরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। খবর পেয়ে আটোয়ারী থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং মারধরে ব্যবহৃত স্টিলের অ্যাঙ্গেলটি জব্দ করে।

আহত ব্যবসায়ী তৌহিদুরের ভাতিজা মো. আউয়াল অভিযোগ করেন, কাউন্সিলর শাহজাহান বেশ কিছুদিন ধরে তাঁর চাচার কাছে চাঁদা দাবি করছিলেন। এই চাঁদা না দেওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত ছিলেন। শেষ পর্যন্ত তাঁর চাচার ওপর হামলাই চালালেন। এ সময় তাঁর গুদামে থাকা ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকাও নিয়ে যান কাউন্সিলর।

ঘটনা সম্পর্কে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ সুলতান বলেন, বিকেলে তাঁরা কয়েকজন তৌহিদুরের গুদাম থেকে ৫০–৬০ গজ দূরে একটি দোকানে চা খাচ্ছিলেন। এ সময় চিৎকার শুনে তাঁরা গিয়ে দেখেন, গুদামের বাইরে কাউন্সিলর শাহজাহান একটি স্টিলের অ্যাঙ্গেল দিয়ে তৌহিদুরকে পেটাচ্ছেন। কিছুক্ষণের মধ্যে শাহজাহান সেখান থেকে চলে যান।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক নবকান্ত রায় বলেন, ব্যবসায়ীর মাথায় আঘাতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। সেখানে পাঁচটি সেলাই লেগেছে।

কাউন্সিলর শাহজাহান দাবি করেন, তিনি তাঁর ওয়ার্ডকে মাদক ও জুয়ামুক্ত করতে চান। তৌহিদুরের বাড়িতে প্রতিদিন জুয়ার আসর বসে। তিনি বারবার তাঁকে নিষেধ করেছেন। আজও (বৃহস্পতিবার) তিনি তাঁর গুদামে জুয়ার আসর বসিয়েছিলেন। তিনি তাতে বাধা দিতে গেলে প্রথমে তৌহিদুর তাঁকে আঘাত করেন। এ সময় ধাক্কাধাক্কির একপর্যায়ে গুদামের শাটারের অ্যাঙ্গেল লেগে তৌহিদুর মাথায় আঘাত পান। তিনি তাঁকে মারধর করেননি। গুদাম থেকে টাকা নিয়ে যাওয়া বা চাঁদা দাবি করার অভিযোগও সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

আটোয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইজার উদ্দীন বলেন, জুয়া খেলায় বাধা দিতে গিয়ে কাউন্সিলরের সঙ্গে মারামারির খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ মামলা করেনি।