করোনা পরবর্তী সঙ্কট মোকাবিলায় কারিগরি শিক্ষায় গুরুত্বারোপ শিক্ষামন্ত্রীর

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। ফাইল ছবি
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। ফাইল ছবি

করোনাভাইরাস মহামারি পরবর্তী অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবিলা করতে কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষ কর্মী গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

সোমবার রাতে ইয়াং বাংলা আয়োজিত লেটস টক 'কোভিড-১৯ রিকভারি টিভিইটি (টেকনিক্যাল অ্যান্ড ভকেশনাল এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং) ফর ইয়ুথ' শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনায় এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (সিআরআই) পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ইয়াং বাংলা সিআরআইয়ের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ এর কারণে বিশ্বে প্রায় একশ কোটি মানুষ কর্মসংস্থান হারাবে বলে অনেকে ধারণা করছেন। এ সময় বিশ্বে কী ধরনের দক্ষ কর্মীর প্রয়োজন হবে সেটা ভাবতে হবে।

দীপু মনি বলেন, 'গ্লোবাল (বৈশ্বিক) এবং একই সঙ্গে লোকাল (স্থানীয়) একটা দক্ষতার ম্যাপিং করতে হবে এবং সেই ম্যাপিং এর মধ্য দিয়ে আমাদের ম্যাচ করতে হবে, ডিমান্ডের (চাহিদা) সঙ্গে আমাদের ম্যাচ করতে হবে।'

সেজন্য স্থানীয় ভাবে এবং বিশ্ববাজারের জন্য কী ধরনের দক্ষতার কত কর্মী প্রয়োজন হবে, সেটা জেনে নিয়ে সেভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার তাগিদ দেন শিক্ষামন্ত্রী।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন , কোন মার্কেটে কী ধরনের দক্ষ লোকের প্রয়োজন হবে, সেজন্য তাদের কী ধরনের টেনিং দিয়ে আমি পাঠতে পারব তা ঠিক করতে হবে। যারা ইতোমধ্যে বিভিন্ন দক্ষতা অর্জন করেছেন তাদের অনেকের প্রাতিষ্ঠানিক সনদ নেই। সে কারণে হয়ত কম রোজগার করছেন। যদি আমরা অতীতের কাজের দক্ষতা ও শিক্ষার বিষয়টি সার্টিফাই করি, তাহলে তারা অনেক ভালো কাজ করার সুযোগ পেয়ে যাবেন।'

পেশাগত ক্ষেত্রে একজন মানুষের যত রকম দক্ষতার প্রয়োজন হয়, উপযুক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সেভাবে কর্মীদের তৈরি করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে দীপু মনি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, 'এই প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে কী কী কোর্সের ব্যবস্থা আমরা করব, সেটা আইডেন্টিফাই করতে হবে। পড়ানোর জন্য আমাদের শিক্ষকদেরকে নতুন করে প্রশিক্ষণ দিতে হবে।'
সমাজে কারিগরি শিক্ষার একটি 'গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে' মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “এটাকে যদি আমরা মেইনস্ট্রিমে নিয়ে আসি বা নিয়ে আসতে চাই, তাহলে কিন্তু মানুষের মনোজগতে পরিবর্তন আনতে হবে এবং কোভিড-১৯ পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হলে দক্ষ কর্মী গড়ে তোলার বিকল্প নেই।”
ভার্চুয়াল আলোচনায় যোগ দিয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, 'একটি দেশের বেশিরভাগ জনগণ যেখানে বৃত্তিমূলক একং কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হবে সেখানে আমাদের এখানে ঠিক উল্টো চিত্র।'

শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জনগোষ্ঠীকে জনসম্পদে রূপান্তরের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থাকে যেভাবে সাজাতে চেয়েছিলেন, সেখানে প্রথম পদক্ষেপই ছিল বৃত্তিমূলক এবং কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা।

মুহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, পরবর্তীতে যখন অগণতান্ত্রিক সরকার আসে, তখন সেই ফোকাসটা ছিল না, সেখানে বিশ্লেষণের কোনো বহিঃপ্রকাশ ছিল না।... তখন আমাদের অর্থনীতিতে অদক্ষ কর্মী তৈরি হয়েছে। সেখানে দক্ষ কর্মী তৈরি করার পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে সস্তা জনপ্রিয়তার শিক্ষানীতির কারণে।”

শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন দেশে আবার কারিগরি শিক্ষার ধারা শুরু করলেন, তখন তাকে 'শূন্য থেকে শুরু' করতে হয়েছে।


উপমন্ত্রী বলেন, এখন বৈশ্বিক বাস্তবতায় টিকে থাকতে হলে আমাদের সন্তানেরা এগিয়ে আসছে, আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক মানসিকতা সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে কারিগরি শিক্ষা তুলে ধরতে হবে।'