প্লাজমা দেওয়ার কথা বলে টাকা নিতেন তিনি

প্লাজমা দেওয়ার কথা বলে প্রতারণার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত
প্লাজমা দেওয়ার কথা বলে প্রতারণার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কোনো রোগীর শারীরিক অবস্থা যখন গুরুতর হয়, তখনই তাকে প্লাজমা দেওয়া হয়। তবে সেটি সংগ্রহ করতে হয় রোগীর স্বজনদেরই। তাঁদের অনেকেই শরণাপন্ন হন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে। আর তাঁদের অনেকেই প্রতারিত হন সেখানে ওত পেতে থাকা প্রতারকদের কাছে। প্লাজমা দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে টাকা নিয়ে সটকে পড়েন এই প্রতারকেরা।

প্রতারণার এমন অভিযোগে শরিফ খান ওরফে বাবু (৩২) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে মতিঝিল এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। শরিফের বাড়ি চাঁদপুরের কচুয়া থানার গোলবাগে। ঢাকার বিভিন্ন স্থানে সময়ে সময়ে তিনি অবস্থান করতেন। এই শহরে তাঁর কোনো স্থায়ী আবাস তাই পাননি গোয়েন্দারা। তাঁর বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় একটি মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার তাঁকে আদালতে তুলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর না করে তাঁকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, ‌‌‌‍‘প্লাজমা ব্যাংক অব বাংলাদেশ (কোভিড-১৯)’ নামে ফেসবুকে একটি গ্রুপ আছে। গ্রুপটির সদস্যসংখ্যা প্রায় দুই লাখ। করোনায় আক্রান্ত কোনো রোগীর প্লাজমার প্রয়োজন হলে তার স্বজনেরা এই গ্রুপে রক্তের গ্রুপ লিখে সহযোগিতা চান। সঙ্গে তাঁরা নিজেদের ব্যক্তিগত মুঠোফোন নম্বরও দিয়ে দেন। প্রতারকেরা তখন এসব মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করেন। এ ক্ষেত্রে তাঁরা সেসব স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, যাঁরা দুর্লভ রক্তের গ্রুপের (এ নেগেটিভ, বি নেগেটিভ, ও নেগেটিভ, এবি নেগেটিভ) প্লাজমা চেয়ে পোস্ট দেন।

ডিবির তেজগাঁও অঞ্চলের সহকারী কমিশনার মুজিব আহম্মদ পাটওয়ারী প্রথম আলোকে বলেন, স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রতারকেরা তাঁদের অবস্থান জানতে চান। স্বজনরা যদি তাঁদের অবস্থান চট্টগ্রাম বলেন, প্রতারকেরা তখন তাঁদের অবস্থান দূরবর্তী কোনো জেলার কথা বলেন। তাঁরা তখন গাড়িভাড়া বাবদ কিছু অর্থ তাঁদের পাঠাতে বলেন। স্বজনেরা সেই অর্থ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাঠানোর পরই প্রতারকেরা টাকা নিয়ে ফোন বন্ধ করে দেন।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রতারিত হয়ে ‌‌‌‍‘প্লাজমা ব্যাংক অব বাংলাদেশ (কোভিড-১৯)’ গ্রুপের অ্যাডমিনের কাছে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন। তাঁর কাছ থেকে মুঠোফোন নম্বর নিয়ে তদন্ত শুরু করেন তাঁরা। একপর্যায়ে শরিফ খানকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন। শরীফ খান প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অন্তত ২০ থেকে ২২ জনের সঙ্গে এমন প্রতারণা করেছেন বলে জানিয়েছেন। এমন আরও অনেক প্রতারক আছেন। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টাও অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি।