পুলিশের বিরুদ্ধে নারীদের মারধরের অভিযোগ

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় বিবদমান দুই পক্ষের সংঘর্ষ থামাতে বাড়িতে ঢুকে নারীদের মারধর করার অভিযোগ উঠেছে থানা–পুলিশের বিরুদ্ধে। তবে পুলিশ পাল্টা অভিযোগ করেছে নারীদের নিক্ষেপ করা ইটের আঘাতেই দুই এসআইসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

শনিবার বেলা ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত দফায় দফায় এ হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটে আলফাডাঙ্গা উপজেলার টগরবন্দ ইউনিয়নের মালা গ্রামে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গ্রামটিতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আলীমুজ্জামান সিকদার (৬৫) ও আশরাফুল সরদারের (৬০) মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এর জেরে প্রায়ই দুই পক্ষের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে সংঘর্ষ বাধে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় আশরাফুল সরদারের সমর্থক মুন্না শেখ বিয়ের বাজার করে বাড়িতে যাওয়ার সময় প্রতিপক্ষের মারধরের শিকার হন। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে শনিবার বেলা ১১টার দিকে বিল্লাল শেখ নামে আলীমুজ্জামানের এক সমর্থককে মারধর করা হয়। এরপর দুই পক্ষে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। খবর পেয়ে আলফাডাঙ্গা থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে পুলিশ ঘরে ঘরে তল্লাশি শুরু করে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাড়িতে তল্লাশির সময় পুলিশ সদস্যরা নারীদের গালিগালাজ ও মারধর করেন। গ্রামের বাসিন্দা মমতাজ বেগম (৬২) বলেন, পুলিশের লাঠির আঘাতে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা আরছিনা গুরুতর আহত হলে তাঁকে প্রথমে কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ছাড়া পুলিশ রেবেকা বেগম, মনিরা খাতুনসহ আরও তিন নারীকে পিটিয়ে আহত করে বলেও অভিযোগ করেন গ্রামের বাসিন্দারা।

আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পর ঘরে ঘরে তল্লাশি করতে গেলে নারীরা পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। অনেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়েন।

ওসি দাবি করে বলেন, নারীদের ছোড়া ইটের আঘাতে দুই উপপরিদর্শকসহ (এসআই) পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে নয়ন মণি নামে এক নারী এবং আলিম সরদার ও মো. চয়ন নামের দুজনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশের ওপরে হামলার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, অন্তঃসত্ত্বা ওই নারী কীভাবে আহত হয়েছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে মধুখালী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।