বিপদে ডেকোরেটর-মাইক ব্যবসায়ীরা

ভাড়া না হওয়ায় অলস সময় কাটাচ্ছেন মাইক সার্ভিসের মালিক-শ্রমিকেরা। সৈয়দপুরের উজালা মাইক সার্ভিস নামের দোকানে। ছবি: প্রথম আলো
ভাড়া না হওয়ায় অলস সময় কাটাচ্ছেন মাইক সার্ভিসের মালিক-শ্রমিকেরা। সৈয়দপুরের উজালা মাইক সার্ভিস নামের দোকানে। ছবি: প্রথম আলো

করোনা পরিস্থিতির কারণে নীলফামারীর সৈয়দপুরে তিন মাস ধরে বন্ধ রয়েছে সব সরকারি, সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এতে মহা বিপাকে পড়েছেন মাইক ও ডেকোরেটর ব্যবসায়ীরা। একদিকে বন্ধ হয়েছে আয়, অন্যদিকে ফুরিয়ে এসেছে জমানো টাকা। ফলে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা।

সৈয়দপুর শহরে শতাধিক ছোট মাইক ও ডেকোরেটর ব্যবসায়ী রয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে রোজগার না থাকায় অসহায় অবস্থায় দিন যাপন করছেন তাঁরা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ দোকান খোলা থাকলেও নেই কাজের ব্যস্ততা। সকালে বাসা থেকে এসে দোকান খুলে বসে থেকে আবার সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। দিন শেষে হিসাবের খাতা শূন্য।

উজালা মাইক সার্ভিসের মালিক চাঁদ বলেন, বিভিন্ন ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। প্রায় তিন মাসে তাঁদের ৩০০ টাকাও আয় হয়নি। অথচ কর্মচারীদের খরচ দিতে হচ্ছে। জমানো টাকা যা ছিল, তা-ও শেষ হয়ে গেছে।

মাইক অপারেটর আবুল কালাম আজাদ জানান, করোনাকালে প্রচার-প্রচারণা বন্ধ থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে আছেন। কেউ তাঁদের সহায়তাও করছেন না। বাকি দিনগুলো কীভাবে কাটবে, সেটাই এখন বড় চিন্তা।

আদিবা কনভেনশন হলের মালিক এস কে আলম জানান, সৈয়দপুরে ১০টি কমিউনিটি সেন্টার রয়েছে। মার্চ থেকে কোনো অনুষ্ঠান হচ্ছে না। অথচ কমিউনিটি সেন্টারের ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল গুনতে হচ্ছে। এভাবে আর চালানো সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, এসব অনুষ্ঠানে যাঁরা ভিডিও করেন তাঁরাও বেকার হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া ব্যান্ড পার্টির লোকজনও কোনো অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ না পাওয়ায় তাঁদেরও পিঠ দেয়ালে ঠেকেছে।

ডেকোরেটর মালিক রুপা জানান, সামাজিক অনুষ্ঠান নেই। তাই তাঁদের ডেকোরেটরও ভাড়া হচ্ছে না। করোনায় সব ধরনের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক আয়োজন বন্ধ থাকায় কঠিন বিপদে পড়েছেন ডেকোরেটরের মালিক-শ্রমিকেরা।

জানতে চাইলে সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র অধ্যক্ষ মো. আমজাদ হোসেন সরকার বলেন, পৌর পরিষদ কিছু কিছু মাইক অপারেটর ও সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা করেছে। সরকারি বরাদ্দ পেলে অন্যদেরও সহযোগিতা করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাসিম আহমেদ বলেন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে জেলে, কামার, তাঁতি, কুমার, ডেকোরেটরশিল্পের সঙ্গে জড়িত সব পেশাজীবী মানুষের তালিকা করে তাঁদের সহযোগিতা করা হবে।