রূপপুর প্রকল্পে যোগ দিতে আসা শ্রমিকদের অনেকেই কোভিডে আক্রান্ত

প্রতীকী ছবি। ছবি: রয়টার্স
প্রতীকী ছবি। ছবি: রয়টার্স

পাবনায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। নতুন শনাক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজে যোগ দিতে আসা শ্রমিকের সংখ্যা বেশি। আজ সোমবার সন্ধ্যায় সবশেষ নমুনা পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী গত ৪৮ ঘণ্টায় জেলায় ১৩৬ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় কোভিড-১৯-এ আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৫৮৪।

নতুন শনাক্ত ১৩৬ জনের মধ্যে ঈশ্বরদীর ৯৮ জন, যাঁদের অধিকাংশই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের অস্থায়ী শ্রমিক-কর্মচারী। আক্রান্ত কর্মীদের বেশির ভাগই রূপপুর প্রকল্পের সাব-ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পাহাড়পুর কুলিং টাওয়ার লিমিটেডের শ্রমিক-কর্মচারী।
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আসমা খাতুন এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
রূপপুর প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দাবি, আক্রান্ত ব্যক্তিদের কেউই প্রকল্পে স্থায়ী কর্মী নন। সবাই নতুন কাজে এসেছেন।
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রকল্প কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রূপপুর প্রকল্পে বিদেশি নাগরিক থাকায় শুরু থেকেই প্রকল্প এলাকায় বিশেষ নজরদারি রাখা হয়েছে। প্রকল্পের ভেতরে একটি মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে প্রতিদিন প্রত্যেক শ্রমিক-কর্মচারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে প্রকল্পে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে বাইরে থেকে নতুন শ্রমিক এলে তাঁদের নমুনা পরীক্ষার পর প্রকল্পে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। এমন প্রায় ৮০০ নমুনা সংগ্রহ করে সরকারি বিভিন্ন ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়েছে। তাঁদের মধ্য থেকেই শনাক্ত ব্যক্তিরা চিহ্নিত হয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রধান (পিডি) শওকত আকবর বলেন, আক্রান্ত ব্যক্তিদের কেউ প্রকল্পের নিয়মিত শ্রমিক-কর্মচারী নন। তাঁরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হয়ে নতুন কাজে যোগ দিতে এসেছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী নমুনা পরীক্ষা করে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ায় তাঁদের কাজে যোগ দিতে দেওয়া হয়নি। ফলে প্রকল্পের ভেতর করোনাভাইরাস সংক্রমণের কোনো উপায় নেই। স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নমুনা পরীক্ষায় জটিলতার জন্য বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকার পর পরীক্ষার ফলাফল আসতে শুরু করেছে। এ পর্যন্ত জেলা থেকে ৬ হাজার ৫৩০টি নমুনা পরীক্ষা করতে দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৬ হাজার ৩৪০টির ফলাফল পাওয়া গেছে। সবশেষ দুই দিনে ১৩৬ জন নতুন শনাক্ত হয়েছেন। মোট আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৫৫ জন। মারা গেছেন নয়জন।
এ প্রসঙ্গে জেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সদস্যসচিব ও সিভিল সার্জন মেহেদী ইকবাল বলেন, রাজশাহী ল্যাবে নমুনার চাপ বেশি থাকায় পরীক্ষায় কিছুটা বিড়ম্বনা তৈরি হয়েছে। জেলায় একটি পিসিআর ল্যাব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া নতুন সংক্রমণ প্রতিরোধে বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের অধিকাংশই সুস্থ আছেন।
জেলায় প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত ১৬ এপ্রিল। এরপর মে মাসের শেষ দিন পর্যন্ত দেড় মাসে ৩৬ জন শনাক্ত হয়। জুন ও জুলাইয়ে এসে এই সংখ্যা ৫৮৪।