নেত্রকোনায় করোনা পরীক্ষার নমুনা উধাও

কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়েছিলেন নেত্রকোনার একটি বেসরকারি সংস্থার একজন কর্মসূচি পরিচালক। ৯ দিনেও ফলাফল না পেয়ে বুধবার দুপুরে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগে যোগাযোগ করেন তিনি। এরপর জানতে পারেন, তাঁর দেওয়া নমুনাটি ‘উধাও’ হয়ে গেছে।

জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় ও ওই কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেলা শহরের নিখিলনাথ সড়কের বাসিন্দা ওই কর্মকর্তা গত ২৭ জুন জ্বর ও সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হন। ৩০ জুন তিনি নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে গিয়ে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। অসুস্থ হওয়ার পর থেকে তিনি বাসার একটি কক্ষে আইসোলেশনে রয়েছেন। কিন্তু নমুনা দেওয়ার পর ৯ দিন হয়ে গেলেও পরীক্ষার ফলাফল জানতে পারেননি তিনি। এরপর তিনি বুধবার দুপুরে শহরের জয়নগর এলাকায় জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে তাঁকে জানানো হয়, ওই তারিখে সংগৃহীত সব নমুনা পরীক্ষার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ল্যাবে পাঠানো হয়েছিল। তার সব প্রতিবেদন আরও দুই-তিন দিন আগেই চলে এসেছে। কিন্তু ওই কর্মকর্তার দেওয়া নমুনাটি অজ্ঞাত কারণে ‘মিসিং’ হয়ে গেছে। তাঁকে (ওই কর্মকর্তাকে) আবারও নমুনা দিতে বলেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘বর্তমানে আমি সুস্থ। কিন্তু করোনায় আক্রান্ত হয়েছি কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে না পারায় আইসোলেশন থেকে মুক্ত হতে পারছি না।’ তিনি জানান, পরীক্ষার ফলাফল সম্পর্কে নিশ্চিত না হওয়ার কারণে তাঁর বাসার প্রত্যেকে এখনো আতঙ্কে রয়েছেন।

জানতে চাইলে নেত্রকোনার সিভিল সার্জন মো. তাজুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা নমুনা সংগ্রহের পর পরীক্ষার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে পাঠিয়ে দিই। সম্ভবত সেখান থেকেই নমুনাটি মিসিং হয়েছে।’ নমুনা উধাও হওয়ার মতো এমন আরও কয়েকটি ঘটনা আগেও ঘটেছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) জেলা কমিটির সভাপতি শ্যামলেন্দু পাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য বিভাগের খামখেয়ালিপনার জন্য এমন হয়েছে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি থাকলে এমন হতো না। নমুনা উধাও হওয়ার বিষয়টি একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।’

এদিকে, নেত্রকোনায় গত ২ এপ্রিল থেকে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত পরীক্ষাগারে পাঠানো নমুনার সংখ্যা ৭ হাজার ২২৬টি। এর মধ্যে ৭ হাজার ১৬৭টির প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। এগুলোর মধ্যে ৫৪৮টি নমুনা পজিটিভ এসেছে। জেলায় এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩০৮ জন এবং মারা গেছেন ৫ জন।