সাতক্ষীরায় বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেল ৩ ছাত্র-ছাত্রী

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটি, পুলিশ ও শিক্ষকের হস্তক্ষেপে দুই ছাত্রী ও এক ছাত্র বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেল। আজ রোববার সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আগড়দাঁড়ি ও তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নে এসব বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল।
সাতক্ষীরা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটির প্রশাসনিক প্রধান সাকিবুর রহমান জানান, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আগড়দাঁড়ি ইউনিয়নের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি গত শুক্রবার খবর পান। বিষয়টি তিনি ওই দিনই সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), জেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাকে অবহিত করেন।
আজ বেলা দেড়টার দিকে সাতক্ষীরা সদর থানার উপপরিদর্শক শিমুল হোসেন, সহকারী উপপরিদর্শক নজরুল ইসলাম ও ওই ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ শহিদুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে সাকিবুর রহমান ওই বাড়িতে হাজির হন। ওই বাড়িতে তখন বিয়ের আয়োজন চলছিল। বর এলেই শুরু হবে বিয়ের অনুষ্ঠান। এ সময় পুলিশ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সাকিবুর রহমান কনের বাবার কাছে মেয়ের জন্মসনদ দেখতে চান। জন্মসনদে দেখা যায়, কনের বয়স ১৪ বছর। বিয়েবাড়িতে পুলিশ এসেছে জেনে বরপক্ষ মাঝপথ থেকে ফিরে যায়।
পরে ছাত্রীর মা-বাবা মেয়েকে ১৮ বছরের আগে বিয়ে দেবেন না বলে মুচলেকা দেন।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেবাশীষ চৌধুরী জানান, তাঁকে জানিয়ে পুলিশসহ বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটির সদস্যরা ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে বিয়ে বন্ধ করেছেন।
সাকিবুর রহমান আরও জানান, তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের ১৬ বছর বয়সের দশম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রের সঙ্গে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বেনেরপোতা গ্রামের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর বিয়ের আয়োজন চলছিল। আজ রোববার বিয়ের দিন ধার্য ছিল। এ জন্য ছাত্রের গ্রামে গোপনে বিয়ের আয়োজন করা হয়।
বিয়ে উপলক্ষে ছাত্রীকে গতকাল শনিবার ওই গ্রামে অন্য একজনের বাড়িতে নিয়ে তোলা হয়। খবর পেয়ে গতকাল ছাত্রের গ্রামে যান বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটির সদস্য মামুন রেজা ও উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান। তাঁরা ছাত্রদের বাড়িতে পৌঁছালে বাড়ির লোকজন গা-ঢাকা দেন। এ সময় মেয়ের জন্মনিবন্ধনে দেখা যায় বয়স ১৪ বছর। পরে মেয়ের মামা ভাগনিকে নিয়ে মেয়েটির নিজ গ্রামে ফিরে যান।
সাকিবুর আরও জানান, আজ রোববার বিকেলে ছেলের বাবা তালা উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার দপ্তরে হাজির হয়ে বিয়ের এ উদ্যোগের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। ছেলেকে ২১ বছরের আগে বিয়ে দেবেন না বলে মুচলেকাও দেন তিনি।
তালা উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা নাজমুন নাহার এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।