করোনায় বাংলাদেশে প্রায় ৪ কোটি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত: ইউনেসকো

করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হওয়ার আগেই দক্ষিণ ও পশ্চিম এশিয়া শিক্ষামূলক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিল বলে জানিয়েছে ইউনেসকো। করোনার কারণে এ পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে আশঙ্কা আন্তর্জাতিক সংস্থাটির। ইউনেসকো জানিয়েছে, বাংলাদেশে করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হবে প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থী।

করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষার ওপর প্রভাব নিয়ে আগস্টে প্রকাশিত জাতিসংঘ মহাসচিবের পলিসি ব্রিফের তথ্য দিয়ে ইউনেসকো এসব তথ্য জানিয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বিশ্বে শিক্ষা বিপর্যয়ের বিষয়ে সতর্ক করেছেন। তিনি ইউনেসকোর ২ কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়তে পারে বলে ইঙ্গিত করেছেন।

ইউনেসকো জানিয়েছে, করোনার কারণে বাংলাদেশে ৩ কোটি ৯৯ লাখ ৩৬ হাজার ৮৪৩ শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত। এর মধ্যে মেয়ে ২ কোটি ২১ লাখ ৫ হাজার ৫৮৯ এবং ছেলে ১ কোটি ৯৭ লাখ ২১ হাজার ২৫৪ জন। যার মধ্যে প্রাক-প্রাথমিকে ১ কোটি ১৮ লাখ ৫ হাজার ৮২৫ জন, প্রাথমিকে ৮৭ লাখ ৯৯ হাজার ৩৩ জন, মাধ্যমিকে ৮৩ লাখ ৫৩ হাজার ৮৪৬ জন এবং ১২ লাখ ৭৬ হাজার ৮৮৫ জন উচ্চশিক্ষায়।

এক ভিডিও বার্তায় জাতিসংঘ মহাসচিব বলেছেন, ‘মহামারির আগেই আমরা একটি শিক্ষা সংকটের মুখোমুখি হয়েছি। এখন প্রজন্মের বিপর্যয়ের মুখোমুখি হচ্ছি। যা মানুষের সম্ভাবনাগুলো নষ্ট করতে পারে। কয়েক দশকের অগ্রগতিকে বিনষ্ট করতে পারে এবং সমাজের বৈষম্যকে আরও বাড়িয়ে দেবে।’

ইউনেসকোর তথ্যমতে, মহামারির চূড়ান্ত সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় ১৯০ টিরও বেশি দেশে প্রায় ১৬০ কোটি শিক্ষার্থীর বা বিশ্বের শিক্ষার্থীদের সংখ্যার ৯৯ শতাংশের ওপর প্রভাব ফেলেছে। এটা এখন ১০০ কোটিতে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া প্রায় ১০০টি দেশের স্কুল পুনরায় চালু করার জন্য কোনো তারিখ ঘোষণা করতে পারেনি।

পলিসি ব্রিফ ইঙ্গিত করে যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শেষের দিকে ২০২০ সালে প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষায় ২ কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়তে পারে। ঝুঁকিতে থাকা শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় অংশ ৫৯ লাখ দক্ষিণ ও পশ্চিম এশিয়াতে। আর সাব-সাহারান আফ্রিকাতে ঝুঁকিতে আছে আরও ৫৩ লাখ শিক্ষার্থী। ইউনেসকো বলছে, মহামারি হওয়ার আগে থেকেই উভয় অঞ্চলই মারাত্মক শিক্ষামূলক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল। এখন তাদের পরিস্থিতি যথেষ্ট খারাপ হতে পারে।

ইউনেসকো বলছে, স্কুল বন্ধ হওয়া শুধু শিক্ষাকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে না; সুষম খাদ্যের জোগান, অভিভাবকদের কাজ করতে যেতে না পারাসহ প্রয়োজনীয় অনেক পরিষেবাগুলোকেও বাধাগ্রস্ত করে। এ ছাড়া নারী ও মেয়েদের প্রতি সহিংসতার ঝুঁকিও বাড়িয়ে তোলে। প্রজন্মের বিপর্যয় থেকে শিক্ষা সংকট রোধে বিশ্বনেতা এবং শিক্ষা–সংশ্লিষ্টদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।