টাঙ্গাইলে বন্যায় রাস্তা ও সেতুর ব্যাপক ক্ষতি

জেলায় রাস্তা ও সেতু ভেঙে প্রায় তিন শ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। অনেক এলাকার বাসিন্দাদের কয়েক কিলোমিটার বেশি ঘুরে গন্তব্যে পৌঁছাতে হচ্ছে। তবে মধুপুর উপজেলার কোনো সেতু ও সড়কের ক্ষতি হয়নি।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বড় বাসালিয়া সেতুর সংযোগ সড়ক এবারের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সম্প্রতি তোলা ছবি।
প্রথম আলো

এবারের বন্যায় টাঙ্গাইলে ১১টি উপজেলার ৩২৮টি রাস্তা ও ৭৩টি সেতু, কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে প্রায় পৌনে তিন শ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাস্তা ও সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় স্থানীয়দের যাতায়াতের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তবে জেলার শুধুমাত্র মধুপুর উপজেলায় কোনো রাস্তা ও সেতুর ক্ষতি হয়নি।

টাকার হিসেবে জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কালিহাতী উপজেলায়। ১৯টি রাস্তার ১১৫ কিলোমিটার ভেঙে ক্ষতির পরিমাণ ৩৭ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। অন্যদিকে পাঁচটি সেতু ও কালভার্টের ১২৫ মিটার ভেঙে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা।

টাঙ্গাইল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) অফিস সূত্রে জানা যায়, টাকার হিসেবে জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কালিহাতী উপজেলায়। ১৯টি রাস্তার ১১৫ কিলোমিটার ভেঙে ক্ষতির পরিমাণ ৩৭ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। অন্যদিকে পাঁচটি সেতু ও কালভার্টের ১২৫ মিটার ভেঙে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা। বিপরীতে সবচেয়ে কম ক্ষতি হয়েছে দেলদুয়ার উপজেলায়। ভেঙে গেছে ৭১টি রাস্তার ২৪১ কিলোমিটার। তবে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। সেতু ও কালভার্টের ৩০২ মিটার অংশে ভেঙে উপজেলাটিতে ক্ষতির পরিমাণ ১ কোটি ১৫ লাখ টাকা।

গত ২৭ জুলাই লৌহজং নদের উপরে সেতুর সংযোগ অংশ ধসে যায়। এতে সদর উপজেলার গালা, কুইজবাড়ি, হটিবাড়ীর সঙ্গে পার্শ্ববর্তী কালিহাতী উপজেলার বাঁশি ও এলেঙ্গার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
আজহার মিয়া, চেয়ারম্যান, মগড়া ইউনিয়ন

জেলার অন্য উপজেলাগুলোর মধ্যে সখিপুরে ৮টি রাস্তা ও ১০টি সেতু, গোপালপুরে ১০টি রাস্তা ও পাঁচটি সেতু, ধনবাড়ীতে ২২টি রাস্তা ও সাতটি সেতু, মির্জাপুরে ২৫টি রাস্তা ও ১১টি সেতু, ভূঞাপুরে ২৫টি রাস্তা ও দুটি সেতু, ঘাটাইলে ৩৪টি রাস্তা ও পাঁচটি সেতু, নাগরপুরে ৩৫টি রাস্তা ও পাঁচটি সেতু এবং সদর উপজেলার ৩৮টি রাস্তা ও তিনটি সেতুর আংশিক ভেঙে গেছে।

সদর উপজেলার মগড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজহার মিয়া জানান, গত ২৭ জুলাই বড়বাসালিয়া গ্রামের লৌহজং নদের উপরে সেতুর সংযোগ অংশ ধসে যায়। এতে সদর উপজেলার গালা, কুইজবাড়ি, হটিবাড়ীর সঙ্গে পার্শ্ববর্তী কালিহাতী উপজেলার বাঁশি ও এলেঙ্গার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। দুই পাড়ের মানুষের যোগাযোগ করতে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়ক ও সেতুর সংস্কারের দাবি জানান তিনি।

টাঙ্গাইল এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম আজম জানান, এবারের বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়েছে। এ জন্য রাস্তা ও সেতুর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি। এলজিইডির আওতাধীন ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা, সেতু ও কালভার্টের তালিকা করে পুনঃনির্মাণের জন্য সদর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। দ্রুতই এগুলো নির্মাণ করে যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করা হবে।

আরও পড়ুন