সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ

সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে শিক্ষক, শ্রেণীকক্ষ, একাডেমিক ভবন সংকটসহ নানা কারণে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। জেলার সর্বোচ্চ এই বিদ্যাপীঠে সাড়ে পাঁচ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ মিলিয়ে শিক্ষক আছেন মাত্র ৩১ জন। ৩০ জন শিক্ষকের পদই শূন্য।
সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ সূত্রে জানা যায়, এ কলেজে চারটি বিষয়ের স্নাতক সমঞ্চান কোর্স, স্নাতক, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে শিক্ষার্থী আছেন সাড়ে পাঁচ হাজার। শিক্ষকের পদ আছে ৬১টি। এর অর্ধেকই শূন্য। প্রতিটি বিভাগে কমপক্ষে চারজন করে শিক্ষক থাকার কথা। কিন্তু ইংরেজি ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগে শিক্ষক আছেন মাত্র একজন করে। বাংলা, উদ্ভিদবিদ্যা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, পদার্থবিদ্যা, হিসাববিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক আছেন দুজন করে। গণিত ও ব্যবস্থাপনা বিভাগে আছেন তিনজন করে। এই শিক্ষকেরাই স্নাতক সমঞ্চানসহ সব শ্রেণীতে পাঠদান করেন। এ ছাড়া কলেজে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১৭টি পদের প্রায় অর্ধেকই খালি রয়েছে। দুই বছর আগে কলেজে একটি একাডেমিক ভবন নির্মাণের জন্য স্থানীয় সাংসদ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেও কোনো কাজ হয়নি। শিক্ষকদের থাকার জন্য কলেজের কোনো আবাসিক ভবন নেই। তাই শিক্ষকেরা এ কলেজে এসে থাকতে চান না। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে এখানে ছেলেমেয়েরা পড়তে আসেন। যাঁরা জেলার বাইরে গিয়ে পড়তে পারেন না, তাঁদের কাছে এই প্রতিষ্ঠানই ভরসা। কিন্তু শিক্ষক সংকটের কারণে বর্তমানে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী মুজাহিদুল ইসলাম, মুমেন আহমদ জানায়, শিক্ষকের অভাবে নিয়মিত ক্লাস হয় না। কোনো কোনো দিন একটা, কোনো দিন দুইটা করে ক্লাস হয়। পরীক্ষায় ভালো ফল করা কঠিন হবে।
বাংলা দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সালমা আক্তার বলেন, ‘শিক্ষক নাই, শ্রেণীকক্ষ নাই, এভাবেই আমাদের পড়ালেখা চলছে। শিক্ষক থাকলে তো গাছতলায় ক্লাস করা যেত।’ কলেজের এসব সমস্যা নিয়ে আট দফা দাবিতে আন্দোলন করছে ছাত্র ইউনিয়ন।
সংগঠনের কলেজ শাখার সভাপতি অভিজিৎ রায় বলেন, ‘এখানে স্নাতক সমঞ্চান কোর্সের বিষয় বাড়ানোসহ স্নাতকোত্তর কোর্স চালু করা দরকার। আমরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে আন্দোলন করছি। শিক্ষামন্ত্রীর কাছে সঞ্চারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু কোনো সাড়া পাচ্ছি না।’ সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ সৈয়দ মহিবুল ইসলাম বলেন, ‘কলেজে সমস্যার শেষ নেই। শিক্ষক সংকট প্রকট। নিয়মিত পাঠদান হয় না। দিন দিন শিক্ষার্থী বাড়ছে কিন্তু সে তুলনায় শ্রেণীকক্ষ নেই। নানা কারণে শিক্ষকেরা সুনামগঞ্জ এসে থাকতে চান না।’