জলাবদ্ধতা ও যানজট নিরসন মূল চ্যালেঞ্জ

নুরুল হক, মোহাম্মদ ফয়েজ উল্লাহ চৌধুরী
নুরুল হক, মোহাম্মদ ফয়েজ উল্লাহ চৌধুরী

দেশের বৃহত্তম পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৩৫ নম্বর বক্সিরহাট ওয়ার্ড। চাক্তাই খালও প্রবাহিত হয়েছে এ এলাকা দিয়ে। এখানে রয়েছে আসাদগঞ্জের মতো আরও একটি বড় বাজার। এ ছাড়া এই ওয়ার্ডের অন্য এলাকাগুলোর মধ্যে আছে রাজাখালী, শাহ আমানত সেতু এলাকা, চামড়ার গুদাম ও বাস্তুহারা কলোনি।
অর্থনৈতিক দিক থেকে গুরুত্ব বহন করা এই ওয়ার্ডের মূল সমস্যা যানজট ও জলাবদ্ধতা। এ ছাড়া সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্যসস্মত শৌচাগারের সংকট রয়েছে। সরেজমিনে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ছগির আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের দীর্ঘদিনের প্রধান সমস্যা যানজট। সরু রাস্তার কারণে এখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়ি আটকে থাকে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যের কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিভিন্ন সময়ে সরকারের মন্ত্রীরা এর সমাধানের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন করেননি। এই সমস্যা সমাধানের জন্য কোরবানীগঞ্জ থেকে মিয়াখান নগর পর্যন্ত সড়ক সম্প্রসারণ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, প্রতিবছর পূর্ণিমা-অমাবস্যার জোয়ারে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে যায়। এতে পানিতে ভিজে আড়তের মালামাল নষ্ট হয়।
এবারের নির্বাচনে এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীদের এসব সমস্যা পূরণের আশ্বাস দিয়ে নির্বাচনের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা। প্রতিদিনই ভোটার ও ব্যবসায়ীদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন তাঁরা।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে রয়েছেন চার প্রার্থী। তাঁরা হলেন বর্তমান কাউন্সিলর নুরুল হক, মোহাম্মদ ফয়েজ উল্লাহ চৌধুরী, মো. জসীম উদ্দিন ও শেখ আহমদুর রহমান চৌধুরী। এখানে মোট ভোটার ১৯ হাজার ১ জন। পুরুষ ১১ হাজার ৯৬৪ ও মহিলা ৭ হাজার ৩৭ জন।
ভোটাররা জানান, চার প্রার্থীর মধ্যে নুরুল হক ও মোহাম্মদ ফয়েজ উল্লাহ চৌধুরী আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। একই দলের হলেও এবারের নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে এই দুজনের মধ্যে। তবে শেখ আহমদুর রহমান চৌধুরী ২০-দলীয় জোটের একক প্রার্থী হওয়ায় কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থায় আছেন। অন্য প্রার্থী মো. জসীম উদ্দিন স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করছেন। এদিকে এই ওয়ার্ডে স্থায়ীর তুলনায় অস্থায়ী বাসিন্দার সংখ্যা বেশি। প্রায় এক লাখ লোকের বসবাস এখানে। এর মধ্যে একটি বড় অংশ রয়েছে শ্রমিক।
তাঁদের ভোট কার দিকে ঝুঁকছে সেটিও বিবেচ্য বিষয়।
চট্টগ্রাম চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর আজম বলেন, এটি দেশের বড় পাইকারি বাজার। কিন্তু এখানে কোনো ট্রাক টার্মিনাল নেই। ফলে পণ্য পরিবহনে খুবই ঝামেলা হয়। পণ্যসামগ্রী পরিবহনের জন্য এখানে এই টার্মিনাল খুবই দরকার। এতে করে অর্থ ও সময় দুটোরই সাশ্রয় হবে।
যোগাযোগ করা হলে কাউন্সিলর প্রার্থী মোহাম্মদ ফয়েজ উল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচিত হলে জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান ও সুপেয় পানির সংকট দূর করার জন্য কাজ করব। শ্রমিক অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় এখানে তাঁদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার স্থাপন করা হবে।’
বর্তমান কাউন্সিলর নুরুল হক বলেন, ‘অসমাপ্ত উন্নয়নকাজ সম্পন্ন করার জন্য এলাকাবাসীর কাছে আরেকবার সুযোগ চাই। এলাকার যানজট নিরসনের জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেছি। এ চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। নালা-নর্দমা নিয়মিত পরিষ্কার করায় অমাবস্যা-পূর্ণিমা ছাড়া এখন তেমন জলাবদ্ধতা হয় না।’